Home জাতীয় মার্চ থেকে পদ্মা সেতুর কাজে আসবে নতুন গতি

মার্চ থেকে পদ্মা সেতুর কাজে আসবে নতুন গতি

by Amir Shohel
পদ্মা সেতু

আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতু চলাচলের উপযোগী করার জন্য দিনরাত কাজ করবে সেতু সংশ্লিষ্টরা। এজন্য নিয়োগ দেয়া হবে বাড়তি জনবল। কারিগরি সমস্যা না থাকায় আগামী বর্ষার আগেই সেতুর বেশিরভাগ কাজ শেষ করতে চায় সরকার। তবে রেললাইনসহ সব ধরণের কাজ শেষ করতে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় লাগবে বলে জানা গেছে। চীনসহ বিশ্বের ১৮টি দেশের প্রকৌশলীরা এ প্রকল্পে কাজ করছেন। আগামি মার্চ থেকে তাই পদ্মা সেতুর কাজের নতুন গতি পাচ্ছে।

দিনরাত কাজ চলছে। ব্রিজের সংযোগ সড়কের প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে বসছে স্লাব লোহার কাঠামো। এবছরের মধ্যে কথা ছিলো উপযুক্ত হবে গাড়ি চলাচলের জন্য। কিন্তু করোনার পর আগের মতো জনবল নেই। যারা আছে তারাই কাজ করে যাচ্ছে নিদিষ্ট গন্ডিতে।

কোন কোন পিলারের ওপর লোহা এবং ইস্পাতের কাঠামো বসানো এখনো বাকি। এরপর নিচে থাকা এইসব স্লাব ক্রেনের মাধ্যমে উঠিয়ে ক্রু বসিয়ে সড়কের গাথুনি মজবুত করা হবে।

স্লাব মানে কনক্রিটের একটি বড় চওড়া প্রস্তরখন্ড। প্রত্যেকটি স্লাব দুই মিটার। এরকম ২ হাজার ৯শ ৭৫টি স্লাব বসবে পুরো পদ্মা সেতুতে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। তাদের তত্ত্বাবধানেই এবং দেশীয় প্রকৌশলীদের সরাসরি নজরদারিতে চলছে স্লাবের কাজ।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে সময়মতো বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্ভব না হওয়ায় পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণের সময় বাড়ছে আরও এক বছর। ব্যয় না বাড়িয়ে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপিতে পদ্মা সেতুর জন্য বরাদ্দও প্রায় অর্ধেক কমিয়ে আনা হচ্ছে। দুই হাজার ৯০১ কোটি টাকা বরাদ্দ কমতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।

আইএমইডির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সর্বশেষ গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পদ্মার সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি ৮০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। মূল সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। তবে পিছিয়ে আছে নদীশাসন। অগ্রগতি মাত্র ৬২ শতাংশ। বাস্তব এই চিত্রের পরিপ্রেক্ষিতেই রাতদিন একাধিক শিফটে কাজ করার সুপারিশ করা হয়েছে আইএমইডির প্রতিবেদনে।

মাওয়া জাজিরা প্রান্তে ছোটবড় ২১টি ফেরি চলাচল করে। ঘাট ভেসে যাওয়া, নাব্য সংকট পুরনো অকেজো ইঞ্জিন নিয়ে ফেরি চলাচল দুর্ভাবনার নাম যাত্রীদের জন্য। এরপর ঈদ এবং ছুটির দিনগুলোতে এই ভোগান্তি বাড়ে আরো কয়েকগুন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে অলস বসে থাকা। অথবা কাঁচামাল নিত্যপন্য নিয়ে বসে থেকে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া নিত্য নৈম্ততিক ব্যাপার।

দুই থেকে তিন ঘন্টা পদ্মা পাড়ি দিয়ে ঈদ বা বড় কোন উৎসবে গ্রামের বাড়ি যাওয়া দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের এখন স্বপ্নপুরণের দ্বারপ্রান্তে। মাত্র আধা ঘন্টা অথবা ৪০ মিনিটে পাড়ি দেয়া যাবে প্রমত্তা পদ্মা।২১টি জেলা শহরের সাথে বন্ধ হবে আরো সুদৃঢ।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈঘ্যের পদ্মার কাঠামো দৃশ্যমান। এবার সেসবের ওপর কাজ করছে শ্রমিকরা। একের পর এক স্লাব বসানো হচ্ছে। ছোট ছোট কার্টে করে মালামাল আনা নেয়া হচ্ছে। দুর থেকে বোঝা যাচ্ছে।

এরপর ২০২২ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে। রেলসংযোগ এবং সৌন্দর্যবর্ধনসহ সব কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালের মধ্যের। কিন্তু এর আগেই ২০২২ সালের জুনের পরেই হয়তো স্বপ্নপুরণের পালা। সে দিকেই তাকিয়ে পুরো বাংলাদেশ।

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like