বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার একটি সবুজ ইউনিয়ন মাহিলাড়া। বরিশাল শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে এই ইউনিয়ন পরিষদের অবস্থান। বহুমূখী উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন হওয়ায় এই ইউনিয়নটি সরকারিভাবে মডেল ইউনিয়ন ঘোষিত না হলেও বরিশাল জেলার মানুষের কাছে এখন মাহিলাড়া একটি মডেল ইউনিয়ন।
১২ দশমিক ১ বর্গ মিলোমিটার আয়োতনের মাহিলাড়া ইউনিয়নের জনসংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। এর মধ্যে ভোটার সাড়ে ১৩ হাজার। নারী ভোটার রয়েছে ৬ হাজার, পুরুষ ভোটার ৭ হাজার। ইউনিয়নে রয়েছে ১১টি গ্রামে ৯টি ওয়ার্ড। এই ইউনিয়নে রয়েছে ৭৯টি মন্দির ৪১টি মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ১২টি। আছে ৪টি মডেল কমিউনিটি ক্লিনিক। এখানে শিক্ষার হার শতকরা ৮৫ ভাগ, সাক্ষরতার হার ৯৮ ভাগ।
মাহিলাড়া ইউনিয়নে পরপর দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সৈকত গুহ পিপলু। তাই উন্নয়নের ধারাও রয়েছে অব্যাহত। শতভাগ স্যানিটেশন, বিভিন্নভাবে স্বাবলম্বী করার মাধ্যমে ভিক্ষুকমুক্ত ইউনিয়ন গড়া, বৃক্ষ রোপনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করে এরই মধ্যে স্থানীয়দের কাছে পরিচিতি পেয়েছে মডেল ইউনিয়ন হিসেবে। এই ইউনিয়নের প্রত্যেকটি গ্রামে কাঁচা পাকা সড়কের পাশে নানা প্রজাতির ফলজ-বনজ বৃক্ষ রোপন করা হয়েছে। এসব গাছের মধ্যে রয়েছে হরতকি, বয়রা, নিম, বাডাম, জলপাই, আমড়া, তাল, আমসহ বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ।
বছর জুড়েই ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে চলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। শতভাগ স্যানিটেশন করা হয়েছে এই ইউনিয়নে। মাহিলাড়া ইউনিয়নে ২৫ জন ভিক্ষুককে সাবলম্বী করে ভিক্ষুকমুক্ত ইউনিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের পাকা ঘর করে দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি তাদের অনেককে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে খাল খনন করা হয়। কাঁচা সড়কগুলোকে পাকাকরণের কাজ চলছে গ্রামে গ্রামে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্লোগান ‘গ্রাম হবে শহর’ বাস্তবায়নে বর্তমান চেয়্যারম্যান নানা উন্নয়নমূখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছেন।
গ্রামকে আলোকিত করতে বসানো হয়েছে রাস্তার দু-ধারে সৌর বিদ্যুতের বাতি। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে সাস্থ্যসেবা। গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকান-পাট, বাজারের নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। এর ফলে কমে গেছে চুরি ডাকাতির মতো অপরাধ।
মাহিলাড়া ইউনিয়নের হাজার-হাজার একর অনাবাদী জমিতে আবাদ করতে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হয়। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো গ্রামের বাড়ি-ঘর, স্কুল-কলেজ এবং মসজিদ-মন্দিরসহ নানা প্রতিষ্ঠান গোলাপী রঙে রাঙিয়ে এর নাম দেয়া হয়েছে গোলাপী গ্রাম। চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত অর্থায়নে গ্রামে নির্মাণ করেছেন একাধিক ব্রিজ-কালভাট।
ইউনিয়নের মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজে উচ্চ শিক্ষার জন্য চালু করা হয়েছে অনার্স কোর্স। চেয়ারম্যান উদ্যোগ নিলেও এর বাস্তবায়ন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ।
চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদ ও কমপ্লেক্স ভবনে বসে পরিচালনা করেন ইউনিয়ন আদালত। যেখানে বসে মানুষের নানা সমস্যার সমাধান দেয়া হয়।
ইউনিয়নের সবুজ বনায়নের জন্য ২০১৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নেন চেয়ারম্যান পিকলু। এছাড়াও শহরের সুবিধা দিয়ে গ্রামকে সাজাতে নানমূখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে ২০১৪ -২০১৫ সালে বরিশাল জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সৈকত গুহ পিপলু।
আরও পড়ুন: ‘পৃথিবী রক্ষায় পদক্ষেপ নেয়ার এখনই সময়, আগামীকাল নয়’
ভয়েস টিভি/এসএফ