মা-বাবার কোল পেয়েছে রাস্তার ধারে ব্যাগের মধ্যে আবর্জনায় কুড়িয়ে পাওয়া সেই শিশু ছেলেটি। শিক্ষক দম্পত্তি শিখা রানী চৌধুরী ও বরুন কুমার পাল শিশুটিকে নিজেদের কাছে পাওয়ায় তাদের যেন আনন্দের যেন শেষ নেই। জীবন দিয়েও শিশুটিকে রক্ষা করবেন তারা। আদালতের আদেশে ১৩ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলে শিশুটিকে এই দম্পত্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়। শিশুটিকে তাদের হাতে তুলে দেন উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের কর্মকর্তারা।
৪ অক্টোবর বিকেলে সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের গোলখালি এলাকার শশ্মান ঘাটের পাশে সড়কে একটি নবজাতককে ব্যাগের মধ্যে কুড়িয়ে পায় স্থানীয়রা। কান্নার শব্দ শুনে ঘটনাটি দৃষ্টিতে আসে স্থানীয়দের। এরপর শিশুটিকে কালিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনাটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার পর বাচ্চাটিকে দত্তক নিতে শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ২৯ জন লিখিতভাবে আবেদন করেন। বাচ্চাটিকে কাছে পেতে আগ্রহীরা শুরু করেন জোর চেষ্টা তদবির। অবশেষে উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড গঠন করা হয়। বাচ্ছাটিকে কে পাবেন, সেটি নির্ধারণ করতে আটটি শর্ত জুড়ে দিয়ে সাতক্ষীরা শিশু আদালতে আবেদনগুলো পাঠানো হয়।
কালিগঞ্জ উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের আহ্বায়ক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, আদালত থেকে সোমবার দেওয়া আদেশ মঙ্গলবার হাতে পাওয়ার পর ১৩ দিন বয়সের ছেলে শিশুটিকে পালক বাবা মা শিখা রানী চৌধুরী ও বরুন কুমার পাল শিক্ষক দম্পত্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেখ তৈয়বুর রহমান, উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও দত্তক পাওয়া পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শিশুটিকে দত্তক পাওয়া শিখা রানী চৌধুরী সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার রাঢ়ীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বরুন কুমার পাল যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। এই দম্পত্তি বাচ্চাটির নাম রেখেছেন তিতাস।
শিশুটির বর্তমান পালিত মা শিখা রানী চৌধুরী জানান, আজ থেকে আমি একটি সন্তানের মা হলাম। অনেকেই সন্তানটি পাওয়ার জন্য চেষ্টা করেছেন। আমি সৌভাগ্যবান বাচ্চাটি আমি পেয়েছি। আমি তাকে সুনাগরিক করে গড়ে তুলবো। জীবন দিয়ে হলেও চেষ্টা করবো।
ভয়েসটিভি/এএস