ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করতে এ সংক্রান্ত আইন সংশোধন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে আইনমন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়ার পরে আইনের সংশোধনী মন্ত্রিসভায় তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সোমবারই মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে আইনটির সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
বাংলাদেশের নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের পর থেকে গত কয়েকদিন ধরে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি উঠেছে প্রতিবাদ সমাবেশগুলো থেকে।
কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ দেশটির বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ থেকে এ দাবি উঠলেও এ নিয়ে নানা বিতর্কও আছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বরাবরই মৃত্যুদণ্ডের বিপক্ষে। তারা বরং বলছে, আইনে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবনের যে সাজা এখন আছে, সেটারই প্রয়োগ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলেই এ ধরণের অপরাধ বাড়ছে।
বুধবার আইনমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করার দাবি সরকার বিবেচনা করছে।
আরও পড়ুন: ইসলামে ধর্ষণের শাস্তি
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর সেটিই চূড়ান্ত ভাবে ঘোষণা করলেন তিনি।
এখন আইনে কী আছে?
২০০০ সালের আগে ধর্ষণের ঘটনায় জরিমানার বিষয়টি বাধ্যতামূলক ছিল না। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জরিমানা বাধ্যতামূলক করা হয়।
এই আইনে বলা হয় যে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা উক্ত ধর্ষণ পরবর্তী তাহার অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে ওই ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং এর অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।’
এছাড়া যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন তাহলে ঐ দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং এর অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।
যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করে বা আহত করার চেষ্টা করে তাহলে তার যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড হবে। আর ধর্ষণের চেষ্টা করলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড হবে।
ভয়েস টিভি/এসএফ