ময়মনসিংহের তারাকান্দায় দীর্ঘ ৩ মাস ৭ দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলনের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ৩ নবেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ৫ নম্বর বালিখা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মালিডাঙ্গা গ্রামে আদালতের নির্দেশে জসিম উদ্দিন খানের ছেলে মৃত হাসিম উদ্দিন খানের লাশ তোলা হয়।
এসময় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তাহমিনা আক্তার, থানা পুলিশের কর্মকর্তাসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জমিজমা সংক্রান্ত জেরে গত ২৬ জুলাই রাত ১০ টার দিকে রাকিব, রফিকুল ও ফেলু মিয়ার হামলার শিকার হন বড়ভাই হাসিম উদ্দিন খান। এসময় পুকুরে ছোট ভাই খোকন মিয়াও হামলার শিকার হন। এসময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন হাসিম উদ্দিন খান।
আরও জানা গেছে, ঘটনার পরদিন সকাল ৮টার দিকে আহত হাসিম উদ্দিন খানকে আত্মীয়রা জোরকরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থার অবনতি ঘটলে পাঁচ আগস্ট তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বক্ষব্যধি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরবর্তীতে ৬ দিন চিকিৎসার পর ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেলের করোনা ইউনিটে। সেখানেই ১৩ আগস্টে মৃত্যু হয় হাসিম উদ্দিনের। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তারাকান্দা থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার সময়ই হাসিম উদ্দিন খানের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এমন রিপোর্ট দেখেই লাশকে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক দাফন করা হয়েছে। তবে আদালতের নির্দেশে মামলা দায়েরসহ মঙ্গলবার লাশ উত্তোলন করেছি।
তবে মৃতের স্ত্রী লুৎফুন্নাহারের (৩০) সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার স্বামী আদৌ করোনা রোগী নয়। তবুও করোনা রোগী হিসেবে মাটি দেয়া হয়েছে। স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর তাই আমি বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
এতে আসামি করা হয়- খোকন মিয়া (৩৫), রুকন খান (৩০) ও জসিম উদ্দিন খান (৬০), নূপুর বেগম (৩০), রাসেল মিয়াকে (৩০)। এছাড়া আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা করা হয়েছে।
তারাকান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, করোনায় আক্রান্তের সার্টিফিকেট দেখেই লাশ দাফন করা হয়েছিলো। মামলার প্রেক্ষিতে আমরা আবার আদালতের নির্দেশে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করেছি। লাশ ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ভয়েসটিভি/এএস