ঢাকা: দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ইউএনও ওয়াহিদা খানমের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় দুটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিউরোসার্জারির বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেন।
৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে ওয়াহিদা খানমকে রাজধানীর ইন্সটিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে তার চিকিৎসা সম্পর্কে ডা. জাহেদ হোসেন বলেন, ওয়াহিদা খানমের অবস্থা সংকটাপন্ন। আগে উনাকে স্টেবল করতে হবে। অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত অপারেশন করা সম্ভব নয়। এই মূহুর্তে উনার অপারেশন হলে সেটা বিপদজনক হবে। ব্লাড প্রেশার ও পালস যদি ইমপ্রুভ না করে তাহলে সেটা সম্ভব নয়। যখন অবস্থা উন্নত হয় তখন আমরা তার অপারেশন করবো।
এর আগে ওয়াহিদা খানমকে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে আনা হয়। ইউএনওর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
২ সেপ্টেম্বর বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সরকারি বাসভবনে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা।
ওয়াহিদা খানমের মুক্তিযোদ্ধা বাবা ওমর আলী নওগাঁ থেকে মাঝে মাঝে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ওয়াহিদা খানমের স্বামী মেজবাহুল হোসেন রংপুরের পীরগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তাদের তিন বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে। হামলার সময় শিশুটি ঘুমন্ত ছিল। বর্তমানে সে ভালো আছে।
আরও পড়ুন: ওয়াহিদা খানমের অবস্থা সংকটাপন্ন, অস্ত্রোপচার অসম্ভব
এ ব্যাপারে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা-ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, প্রথমে নির্বাহী কর্মকর্তার বাবাকে আহত করে বাথরুমে আটকে রাখে। এরপর নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। বাসভবনের নাইট গার্ডকে তালা দিয়ে আটকে রাখে। কাজের মেয়েও নিচে ছিল।
এদিকে এ ঘটনায় সচিবালয়ে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার জট অতি অল্প সময়ের মধ্যে খুলবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ওয়াহিদা খানমের ওপর সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত করা হচ্ছে। দুর্বৃত্তরা ডাকাতি নাকি শত্রুতার জেরে এই ঘটনা কিনা তারও তদন্ত চলছে। ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করা হবে। তার চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
কারা এবং কী কারণে এ হামলা চালিয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। র্যাব-১২ অধিনায়ক রেজা আহমেদ জানান, কারা কী কারণে হামলা করেছে তা তদন্ত করে বের করা হবে।
ভয়েস টিভি/টিআর