Home সারাদেশ দু-দুটি জিপিএ ৫ নিয়ে নতুন যুদ্ধে কব্জীবিহীন মোবারক আলী

দু-দুটি জিপিএ ৫ নিয়ে নতুন যুদ্ধে কব্জীবিহীন মোবারক আলী

by Newsroom

জন্ম থেকেই দুই হাত কব্জীবিহীন দুই হাত নিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন মোবারক আলী। শারিরীক সক্ষমতায় পূর্ণতা না পেলেও মেধায় রয়েছে তার পূর্ণতা। এরইমধ্যে কব্জীবিহীন হাতে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রাথমিক এবং জেএসসিতে  পেয়েছেন জিপিএ-৫।

শারিরীক অপূর্ণঙ্গতায় যথারীতি অংশ নিয়েছেন এসএসসি পরীক্ষা। ২২ নভেম্বর সোমবার ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ৯ নম্বর কক্ষে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসাবে গণিত বিষয়ের পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি।

তার রোল নম্বর ২১৫৭৭৩। সে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে অতিরিক্ত সময় দেওয়া কথা থাকলেও বাড়তি সময় প্রয়োজন হয় না মোবারক আলীর। অন্য শিক্ষার্থীদের মতোই নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে হল ত্যাগ করতে দেখা গেছে।

শারীরিক প্রতিবন্ধী মোবারক আলী  কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে দিনমজুর এনামুল হকের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

পরিবার জানায়, জন্ম থেকে দুই হাতের কব্জি ছিল না মোবারক আলীর। তাকে নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন অভিভাবকরা।    ছেলের এমন অবস্থায় বিচলিত হলেও মনোবল হারাননি মা মরিয়ম বেগম। মায়ের হাত ধরেই কলম ধরা আয়ত্ব করে নেন মোবারক।

মায়ের সাহসে ছেলেকে স্কুলমুখি করতে আগ্রহী হন বাবা।  স্কুলে ভর্তি পর তার সহপাঠিরাও তাকে লেখা শেখার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসে। কব্জীবিহীন হাতেই পরীক্ষা দিয়ে প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসিতে অর্জন করে জিপিএ-৫।

চলতি এসএসসি পরীক্ষায় ওই কব্জী বিহীন দু’হাত একত্রে করে খাতায় উত্তর পত্র লেখে দিচ্ছেন অদম্য মেধাবী মোবারক আলী। দুটি হাতের আঙ্গুল না থাকলেও সুস্থ স্বাভাবিক শিক্ষার্থীর মতই পরীক্ষা দিচ্ছে সে।

জন্মের পর থেকে এভাবেই সে বড় হয়ে উঠে। তার দুটো হাত অচল হলেও কখনও দমেনি এ লড়াকু সৈনিকের লেখা পড়া । শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্বেও কঠোর পরিশ্রম করে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন এবারো।

মোবারক আলী মা মরিয়ম বেগম জানান, দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সে বড় । সে নিজের কাজ গুলো প্রায় সব নিজেই করতে পারে। ওর ইচ্ছাশক্তি প্রবল। আমরা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল। তার পড়েও তাকে উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ।

মোবারক আলী বলেন,  কষ্ট করে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছি। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন ভাল রেজাল্ট করে বাবা-মা সহ শিক্ষকদের মুখ উজ্বল করতে পারি ।

কাশিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জায়দুল হক ভয়েস টেলিভিশনকে জানান, মোবারক প্রতিবন্ধী হলেও যথেষ্ঠ মেধাবী এবং পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও পারদর্শী। আমি আশা করছি সে ভাল ফলাফল করবে।

ফুলবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব গোলাম কিবরিয়া ভয়েস টেলিভিশনকে জানান, মোবারক আলী অন্য শিক্ষার্থীদের মতই প্রতিটি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে বাড়তি সময় দেয়া হয়েছে। কিন্তু সে নির্দিষ্ট সময়েই পরীক্ষার খাতায় লেখা শেষ করছে।

আরও পড়ুন : ময়মনসিংহে চার হাত, চার পা নিয়ে শিশুর জন্ম

You may also like