Home বিশ্ব বাংলাদেশিসহ বিশ্বের ১১ লাখ অভিবাসী শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতে পারে

বাংলাদেশিসহ বিশ্বের ১১ লাখ অভিবাসী শিক্ষার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হতে পারে

by Newsroom
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার নির্দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের ৭ হাজার ৮শ’ ছাত্র-ছাত্রীসহ বিশ্বের ১১ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে দেশটি ছাড়তে হতে পারে। করোনা পরিস্থিতিতে সংকট এড়াতে ৬ জুলাই সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) একটি নির্দেশনার পর এমন আশংকার কথা জানিয়েছে সিএনএন।

আইসিইর নির্দেশনায় বলা হয়, পুরোপুরি অনলাইনে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নন-ইমিগ্রান্ট শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ অনলাইন কোর্সের জন্যেও সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে থেকে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এ ধরণের অনলাইন কোর্সে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের এখন থেকে আর ভিসা দেবে না। এছাড়া অনলাইন কোর্সে নিবন্ধিত বর্তমান শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে ত্যাগ করতে হবে।

সংস্থাটি নির্দেশনায় বলেছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অনলাইনভিত্তিক কোর্সে ভর্তি হলে বিকল্প ব্যবস্থা বিবেচনা করতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনে অধ্যয়নরতরা এ নির্দেশ অমান্য করলে তাদের অভিবাসন আইনের মুখোমুখি হতে হবে।

এ আইনের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী নির্দেশ অমান্যকারীদের গ্রেফতারের পর নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বর্তমানে করোনার কারণে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস অনলাইনে হবে। তাই সশরীরে ক্লাসে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। আইসিইর এ পদক্ষেপের ক্ষতিগ্রস্থ হবে নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রীসহ স্বল্পমেয়াদি ট্রেনিং কোর্সে (নন-একাডেমিক অথবা ভোকেশনাল) অংশগ্রহণকারীরাও।

আমেরিকান কাউন্সিল অন এডুকেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড ফার্নসওয়ার্থ বলেছেন, ‘এই ঘোষণা অনেককে অবাক করে দিয়েছে। আমরা মনে করি এটি আরও বিভ্রান্তি এবং অনিশ্চয়তা তৈরি করতে চলেছে। শিক্ষার্থীদের ভিসার প্রয়োজনীয়তা বরাবরই কঠোর এবং শুধুমাত্র অনলাইনে পাঠ্যক্রমের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা সঠিক নয়।

তিনি আরো বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বিষয় হল যুক্তরাষ্ট্র থেকে কয়েকটি দেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেসস দেশের শিক্ষার্থীরা যেতে পারবে না, তাহলে তারা কী করবে? এটি প্রচুর শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ধাঁধার মতো।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ল্যারি বাকো সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন যে “আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে যুক্তরাষ্ট্র ইমিগ্রেশন এবং শুল্ক বিভাগ যে নির্দেশিকা জারি করেছে তা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিশেষতঃ জটিল সমস্যা ও অস্পষ্টতা রয়েছে।  অনলাইন কোর্সে দেশ ছাড়া বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থানান্তর করার বাইরে কয়েকটি বিকল্প রাখা উচিত।
নির্দেশিকা সম্পর্কে বাকো আরো বলেন,  করোনা পরিস্থিতিতি আমরা দেশের অন্যান্য কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সাথে একত্রে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে একটি নতুন কারিকুলামের জন্যে কাজ করছি। তার মতে, এ ধরণের নির্দেশনা একাডেমিক প্রোগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনায় হার্ভার্ডসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর চিন্তাভাবনা ও কারিকুলাম পদ্ধতিকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।

এদিকে আগামি সেপ্টেম্বরে নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস অনলাইনেই করার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্রের সব বিশ্ববিদ্যালয়। চলতি সপ্তাহে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা এ নিয়ে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করেছেন। করোনার প্রকোপ অব্যাহত থাকলে ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা পরিপূরক নেই বলেও বৈঠকে অভিমত দেন অনেকে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) নির্দেশ অনুযায়ী শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হলে প্রতিটি কক্ষে সর্বোচ্চ আটজনকে বসার ব্যবস্থা করা যাবে। অবশিষ্ট ২২ থেকে ২৩ জন কীভাবে ক্লাস করবে-এমন প্রসঙ্গও উঠেছে নীতি-নির্ধারকদের বৈঠকে।

প্রসঙ্গত, গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে করোনার তাণ্ডব শুরুর পর থেকেই অনেক স্টেট লকডাউন করা হয়। জুন পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্লাস নেওয়া হয় অনলাইনে। এমনকি যারা ক্যাম্পাসে অর্থাৎ ডর্মে (আবাসিক হোটেল) ছিলেন, তারাও ক্লাস করেন অনলাইনে। সেপ্টেম্বরে শুরুতে নতুন শিক্ষাবর্ষেও ক্লাসে উপস্থিত হ্ওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে কেউই মনে করছেন না।

কারণ, গত কয়েক সপ্তাহে ৫০ স্টেটের মধ্যে অন্তত: ৩৬টিতেই উদ্বেগজনক হারে সংক্রমণ বেড়েছে। যেসব শহর অথবা কাউন্টিতে লকডাউন শিথিল করা হয়েছিল, সেগুলোও আবার লকডাউন করা হয়েছে। অর্থাৎ এক ধরণের অস্থিরতা পুনরায় জনজীবনকে গ্রাস করতে চলেছে।

সম্পাদনা : দেলোয়ার

You may also like

1 comment

Comments are closed.