Home জাতীয় যেখানে বিদ্যার দ্যুতির সঙ্গে সুবাস ছড়াচ্ছে বাহারি ফুল

যেখানে বিদ্যার দ্যুতির সঙ্গে সুবাস ছড়াচ্ছে বাহারি ফুল

by Shohag Ferdaus

‌‌‘উৎকর্ষ সাধনে অদম্য’ স্লোগানকে সামনে রেখে ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেশব্যাপী সুনাম কুড়িয়েছে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কলেজটি শিক্ষার আলোকবর্তিকা হাতে যেমন দ্যুতি ছড়াচ্ছে তেমনি কলেজের প্রাণ প্রকৃতিও সহজে হৃদয় কাড়ে। ইট পাথরের শহরে যেখানে সবুজ প্রকৃতি তেমন চোখেই পড়ে না সেখানে ৫৫ একরের বিশাল ক্যাম্পাসটি যেন সবুজের চাদরে মোড়ানো।

আকাশচুম্বী ইউক্যালিপটাস আর সারি সারি শাল বৃক্ষ যেমন ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে তেমনি এখানে রয়েছে নানা জাতের বিরল কিছু ফুলের সমাহার। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিত ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হাউসে গেলে যে কারো চোখ জুড়িয়ে যাবে ফুলের অকৃত্তিম সৌন্দর্যে। হাউসের সামনের খেলার মাঠের পূর্ব পাশের প্রবেশ পথেই আপনাকে অভ্যার্থনা জানাবে নানা জাতের ফুল। শহীদুল্লাহ হাউসের এই ফুলের বাগানটি সযত্নে গড়ে তুলেছেন সেখানকার হাউস টিউটর ও বাংলা বিভাগের প্রভাষক তারেক আহমেদ। প্রতিবেদন ও ছবি সোহাগ ফেরদৌস

শহীদুল্লাহ হাউসের প্রবেশ পথ ধরে একটু সামনে আগালেই অনেক পরিচিত-অপরিচিত ফুল আপনাকে স্বাগত জানাবে। তবে এর মধ্যে সবুজ পাতার ফাঁকে ফুটে থাকা সাদা রঙের শ্বেতকাঞ্চনে আপনার চোখ আটকে যাবে। মনে করা হয় এরা মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন থেকে বাংলাদেশে এসেছে।

সচরাচর আমরা সাদা কাঠ গোলাপ দেখতে পাই। এর সৌন্দর্য ও ঘ্রাণ আমাদের বিমোহিত করে। তবে শহীদুল্লাহ হাউসের সামনে রয়েছে লাল রঙা কাঠ গোলাপ। যার সৌন্দর্য আপনাকে বিমোহিত করবে।

শহীদুল্লাহ হাউসের সামনে ফুটে থাকা হরেক ফুলের মাঝে গোলাপি রঙের আরেকটি ফুলে আপনার দৃষ্টি আটকে যাবে। এটি হলো গোলাপি পানামা রোজ। যার আদি নিবাস দক্ষিণ মেক্সিকো।

পাশেই দেখা যাবে আমাদের পরিচিত একটি রক্ত রাঙা ফুল। এর নাম জবা।

হাউসের পশ্চিম পাশে দেখা যাবে স্থল পদ্ম। নামের সঙ্গে পদ্ম শব্দটি যুক্ত থাকলেও এ ফুল কিন্তু পানিতে হয় না। বরং স্থলেই ওরা জন্মে এবং বেড়ে ওঠে। সচরাচর আমরা হালকা গোলাপি রঙের স্থল পদ্ম দেখলেও এটি হালকা হলুদ বর্ণের। এটি থাইল্যান্ডের জাত হওয়ায় থাই স্থল পদ্ম নামে পরিচিত।

 

এর পাশেই দেখা মিলবে রেড পানামা রোজের। পানামা রোজ সাধারণত গোলাপি হলেও এই লাল রঙের জাতটি বিরল।

হাউসের পূর্ব পাশেই দেখা মিলবে এই হলুদ কলাবতী ফুলের।

হাউসের প্রবেশ পথে হলুদ কাঞ্চনও আপনাকে মুগ্ধ করবে।

বেগুনি রঙের এই ফুলটির নাম গ্রাউন্ড অর্কিড। বাহারী এই ফুলটি ফুটেছে হাউসের পূর্ব দেয়াল সংলগ্ন একটু আড়ালেই। কারণ এ ফুল ভেজা মাটিতে এবং একটু ছায়ায় জন্মে।

কমলাভ লাল বা লালাভ কমলা রঙের ফুলগুলি থোকায় থোকায় ফুটে আছে হাউসের পাশেই। এর নাম হ্যামেলিয়া। এর লম্বা গলা ফুলগুলি হামিংবার্ডের খুব পছন্দের। ফুলের মুখের কাছে উড়ন্ত অবস্থায় তারা মধু খায়। হাউসের পাশের এ ফুলগুলোতেও দেখা গেল লাল পিঁপড়ার দল।

দারুণ সুন্দর ফুল জারবেরা। শহীদুল্লাহ হাউসের কুঞ্জের সৌন্দর্য আরও কয়েকগুণ বাড়িয়েছে লাল রঙা ফুলটি। জার্মান পরিবেশবিদ ট্রাগোট জরবার প্রথম এই ফুলের গণটির অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন বলে তার নামানুসারেই ফুলটির এরকম নামকরণ হয়েছে।

গন্ধরাজ ফুলের সৌন্দর্য ও সুবাস আমাদের পরিচিত। তবে কখনো হলুদ গন্ধরাজ দেখেছেন? হাউসের পশ্চিম পাশের কুঞ্জে ফুটেছে মিষ্টি গন্ধ যুক্ত এই হলুদ গন্ধরাজ।

সবুজ পত্রপল্লবে ঠাসা, কাঁটাময় কাণ্ডে ফুটে থাকা ফুলটি রোজ ক্যাকটাস। পেরেস্কিয়া প্রজাতির ফুলটি রয়েছে হাউসের ঠিক সামনেই।

হাউসের পেছনের সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন লতানো একটি সুন্দর গাছে আপনার দৃষ্টি আটকে যেত বাধ্য। এর নাম ঘোড়া চাবুক। গাছটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো, মঞ্জরীপত্রসহ সুশৃঙ্খল ভাবে বড়ো হওয়া এর পুষ্পদণ্ড। মঞ্জরীপত্রগুলি পুষ্পদণ্ডের এমন ভাবেই বিন্যস্ত থাকে যে দেখলে মনে হবে, কেউ যেন সুন্দর করে বিনুনি বেঁধে দিয়েছে।

শহীদুল্লাহ হাউসের যত্নে গড়া ফুল বাগানে আরেকটি ফুলের সৌন্দর্য আপনাকে আকর্ষিত করবে। এটি মেস্তা জবা।

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like