নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ফাতেমা আক্তার মুন্নি (১৯) নামে এক গৃহবধূকে গলাটিপে হত্যা করেছে স্বামী। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।
৬ মে বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় নিহতের মা খায়েরুন নেছা বাদী অভিযুক্ত স্বামীকে আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এরআগে, ৫ মে বুধবার গভীর রাতের যে কোন এক সময়ে উপজেলার ৫নং ছয়ানী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর নয়নপুর গ্রামের ওদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফাতেমা আক্তার মুন্নি নোয়াখালী পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের মধুসুদনপুর গ্রামের ফরিদ হাজী বাড়ির আহছান উল্যার মেয়ে।
আটককৃত স্বামী মো. জিহাদ (২২) উপজেলার ৫নং ছয়ানী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর নয়নপুর গ্রামের ওদার বাড়ির মো. হারুনের ছেলে।
মামলার এজহারে জানা যায়, গত ৩ মাস ২৭ দিন আগে মুন্নি ও জিহাদ প্রেম করে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিবাহের পর থেকে জিহাদ তাকে একটি ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা কিনে দেওয়ার জন্য শ্বশুরের পরিবারের কাছে দাবি করে। তার স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো।
জিহাদের স্ত্রী তার মা-বাবা গরীব বলে তাদের পক্ষে অটোরিকশা কিনে দেয়া সম্ভব নয় বলে স্বামীকে জানায়। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে মারধর ও নির্যাতন করে। শ্বশুর-শাশুড়ি একাধিকবার মেয়ের স্বামীর বাড়িতে গেলে মেয়ের জামাই তাদের কাছেও অটোরিকশা কিনে দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করে। শ্বশুর-শাশুড়ি অটোরিকশা কিনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সে ফের স্ত্রীর ওপর নির্যাতন করতে।
এর জের ধরে বুধবার রাতে জিহাদ তার স্ত্রীকে অটোরিকশা কিনে দেওয়ার জন্য টাকার এনে দেয়ার কথা বললে এই নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। মুন্নি বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে পারবে না বললে গভীর রাতে বসত ঘরের রুমের খাটের ওপর তার স্বামী তাকে গলা টিপে হত্যা করে। নিহতের শাশুড়ি জোসনা বেগম সেহরী খেতে তাকে ডাকতে গেলে খাটের ওপর পুত্রবধূর মরদেহ দেখতে পায় এবং ভোররাতে মুন্নির মা-বাবাকে তার মৃত্যুর খবর দেয়।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত আসামিকে আটক করে। একপর্যায়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে স্বামী।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান সিকাদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আটককৃত আসামিকে শুক্রবার বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। নিহতের মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে সন্ধ্যায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাত ৯টার দিকে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
ভয়েসটিভি/এএস