Home বিশ্ব ব্যর্থ প্রেমিকের রহস্যময় প্রাসাদ, ৯ টনের দরজা

ব্যর্থ প্রেমিকের রহস্যময় প্রাসাদ, ৯ টনের দরজা

by Shohag Ferdaus
প্রাসাদ

বিয়ের আগের দিন প্রতারিত হয়েছিলেন হবু স্ত্রীর কাছ থেকে। এই আঘাতে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন লাটভিয়ার এডওয়ার্ড লেডস্কালনিন। তার হারিয়ে যাওয়া প্রেম ফিরে পেতে তৈরি করেছিলেন চুনাপাথরের একটি প্রাসাদ, যা আজও রহস্যাবৃত।

প্রেমে ধাক্কা খাওয়ার পরে লাটভিয়া থেকে এডওয়ার্ড চলে গিয়েছিলেন আমেরিকার ফ্লোরিডায়। সেখানেই তিনি এই প্রেমসৌধ তৈরি করেছিলেন তিল তিল করে। বলা হয়, বিশ্বের রহস্যাবৃত প্রাসাদের মধ্যে এডওয়ার্ডের নির্মাণ অন্যতম।

লাটভিয়ায় তার জন্ম ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে। তাদের পারিবারিক ব্যবসা ছিল পাথরের প্রাসাদ তৈরির। সেই দক্ষতা তিনি নিজেও অর্জন করেছিলেন পুরোমাত্রায়। তার তৈরি প্রাসাদে জীবাশ্ম হয়ে যাওয়া পাথরও আছে, যেগুলির উচ্চতা ২৫ ফুট। ওজনে ৩০ টনেরও বেশি।

ফলে এই প্রাসাদে কিছু পাথর রহস্যময় স্টোনহেঞ্জের থেকেও বড়। কিছু প্রবালের ওজন গিজার গ্রেট পিরামিডে ব্যবহৃত এক একটি পাথরের থেকেও ভারী। এ ছাড়াও প্রাসাদে অপেক্ষা করে আছে বহু বিস্ময়। সূর্যঘড়ি, পাথরের রকিং চেয়ারের পাশাপাশি আছে ৫০০ পাউন্ড ওজনের হৃদয়াকৃতি টেবিল। এই টেবিল ছিল তার হারিয়ে যাওয়া প্রেমের প্রতীক। তালিকায় আছে ৯ টন ওজনের দরজা। একটি পালকের স্পর্শেই সেই দরজা ঘুরতে থাকে লাট্টুর মতো।

প্রাসাদ

খুব গোপনে এই প্রবাল প্রাসাদ তৈরি করেছিলেন এডওয়ার্ড। বেশির ভাগ কাজ করেছিলেন গভীর রাতে। যাতে কেউ তার নির্মাণকৌশল জানতে না পারে। ফলে অনেকেরই ধারণা, তিনি প্রাচীন কোনও জাদুবিদ্যা ব্যবহার করেছিলেন।

মানুষকে সবথেকে বেশি যা স্পর্শ করে যায়, তা হল, কৈশোরে হারানো প্রেম তথা প্রেমিকার জন্য এই লাটভিয়ান তার পরবর্তী জীবন কাটিয়েছিলেন শুধু পাথর কেটে এবং বহন করে! প্রাসাদ তৈরির খরচ যোগাড় করতে তিনি বিভিন্ন রকম পেশা গ্রহণ করেছিলেন।

ফ্লোরিডায় চুনাপাথরের এই রহস্যপ্রাসাদ তৈরি করে নাম দিয়েছিলেন ‘এডস প্লেস’। চিরাচরিত প্রাসাদের থেকে এডওয়ার্ডের তৈরি প্রাসাদ ছিল অনেকটাই আলাদা। সেখানে চুনাপাথরের দেওয়াল, ছাদ এবং আসবাবপত্র এমন ভাবে ছিল, যা প্রয়োজনে স্থানান্তরও করা যায়।

তার ভয় হত, প্রাসাদের রহস্য ফাঁস হয়ে যাবে। তিনি পরে ফ্লোরিডা শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে আরও ১৬ কিমি উত্তরে নিয়ে যান তাঁর সৃষ্টিকে। ৩ বছর ধরে চলেছিল এই স্থানান্তর পর্ব।

১৯৫১ সালে ৬৪ বছর বয়সে মারা যান এডওয়ার্ড। তার কোনো উত্তরসূরি ছিল না। ফলে পাথরের প্রাসাদসহ বাকি সম্পত্তির মালিক হন আমেরিকার মিশিগানবাসী হ্যারি নামে তার এক ভাইপো। সময়ের বিবর্তনে প্রাসাদটি মালিকানা বদলেছে কয়েকবার। বদলেছে নামও। ‘এডস প্যালেস’ থেকে ‘রক গেট’, ‘রক গেট পার্ক’ হয়ে এই স্থাপত্যের বর্তমান নাম ‘কোরাল ক্যাসল’।

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like