Home সারাদেশ রাজশাহীতে হঠাৎ কুয়াশা, দুশ্চিন্তায় আম চাষীরা

রাজশাহীতে হঠাৎ কুয়াশা, দুশ্চিন্তায় আম চাষীরা

by Newsroom
রাজশাহীতে

রাজশাহীতে ৬ মার্চ শনিবার ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় প্রাণ-প্রকৃতি। কয়েকদিন থেকে অব্যাহতভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পর হঠাৎ কৃয়াশাচ্ছন্ন হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে আম চাষীরা। প্রকৃতির এমন বিরূপ আচরণ দীর্ঘস্থায়ী হলে আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ফল গবেষক ও বিজ্ঞানীরা।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস বলছে, এবার অনেকটা আগেভা গেই বিদায় নিয়েছে শীত। ফাল্গুনের আগেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির ওপরে উঠে গেছে। বর্তমানে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। এছাড়া দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গিয়ে পৌঁছেছে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।

রাজশাহীতে এবার সময়ের আগেই গরম পড়েছে। শীত বিদায় নিয়েছে অনেক আগেই। আর ঘন কুয়াশা পড়েনি প্রায় এক মাস। এই দীর্ঘ বিরতির পর শনিবার ভোরে হঠাৎই ঘন কুয়াশা পড়ে আমের রাজধানী খ্যাত উত্তরের এ শহরে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বলেন, শনিবার ভোরে সূর্যোদয় হলেও পরে কুয়াশা পড়ে। যা সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এর পরই আবার সূর্যের মুখ দেখা গেছে। আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ।

বর্তমানে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ওঠানামা করছে। এছাড়া দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছে। এর মধ্যে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এখন পর্যন্ত রেকর্ডকৃত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

এদিকে হঠাৎ কুয়াশার ফলে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েন সাধারণ মানুষ। কারণ কুয়াশা পড়ার পর হিমেল বাতাস এই ফাল্গুনী প্রকৃতিতে আবারও শীতের আমেজ ছড়িয়েছে। যারা এরই মধ্যে শীতের কাপড় আলমারিতে তুলে রেখেছেন, তারা আবারও বের করেছেন। গরম কাপড় গায়ে মুড়িয়ে আজ সকালে বাইরে বের হতে হয়েছে অনেককেই।

আর এই ঘন কুয়াশার জন্যে চিন্তার রেখা ফুটে উঠেছে আমচাষিদের কপালে। এমনভাবে কুয়াশা পড়লে আমের মুকুলের ক্ষতি হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা। কারণ ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে আমের মুকুলে ‘পাউডারি মিলডিউ’ নামে এক ধরনের রোগ দেখা দেয়। এতে আমের মুকুল ঝরে পড়ে। যার প্রভাব পড়ে আমের ফলনেও।

মহানগরীর বড়বনগ্রাম এলাকার আমচাষি আহমেদ আলী বলেন, এমন কুয়াশা হঠাৎই পড়েছে আজ। এটি অব্যাহত থাকলে আমের মুকুলের ক্ষতি হবে। মুকুল থেকে এখনই গুটিতে রূপান্তর হওয়ার সময় চলে এসেছে। এ সময়ে ঘন কুয়াশা আমের মুকুলের জন্যে খুবই ক্ষতিকর।

তবে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দিন বলেন, এ বছর মাঘের শুরুতে শীতের তীব্রতা ছিল। ওই সময়ের মধ্যেই অনেক গাছে মুকুল চলে এসেছে। সাধারণত মার্চ মাসের মধ্যেই এই মুকুল আমের গুটিতে পরিণত হয়। এখন কোনো কারণে যদি ঘন কুয়াশা স্থায়ী হয় তাহলে আমের সেই মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি বলেন, অবশ্য এক-দুই দিনের এমন ঘন কুয়াশায় আমের মুকুলের ক্ষতি হবে না। এছাড়া ইতোমধ্যে চাষিরা আমের মুকুলে স্প্রে করে দিয়েছেন। আবহাওয়া যদি রৌদ্রজ্জ্বল হয় এবং তাপমাত্রা একটু একটু করে বাড়তে থাকে, তবে কোনো সমস্যা হবে না।

আরও পড়ুন : সারাদেশে বৃষ্টি থাকবে আরও ৩ দিন

ভয়েস টিভি/এমএইচ

You may also like