ছিলেন গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা। ভাতাসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাও পেয়েছেন অন্যদের মতো। তবে তারা মুক্তিযোদ্ধা নয় বরং এদেশের মুক্তিকামী মানুষের রক্তে রঞ্জিত তাদের হাত। তারা রাজাকার। কুড়িগ্রামের উলিপুরে মুক্তিযোদ্ধার মুখোশধারী এমন দুই রাজাকারের সন্ধান মিলেছে।
৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাচাই-বাছাইয়ে এ দুই রাজাকারের সন্ধান মেলে।
মুক্তিযোদ্ধাবেশি এ দুজন রাজাকার হলেন মোন্তাজ আলী ও মৃত ওসমান আলী। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) কর্তৃক প্রেরিত তালিকায় মৃত ওসমানের নাম ৬ নম্বরে ও মোন্তাজ আলীর নাম ৭ নম্বরে রয়েছে।
তৎকালীন জেলা প্রশাসকের রাজাকারের তালিকায় তাদের রাজাকার হিসেবে যোগদানের তারিখ ২৯ অক্টোবর ১৯৭১ উল্লেখ আছে।
৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে রাজাকার মোন্তাজ ৩ জন মুক্তিযোদ্ধাকে তার পক্ষে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য নিয়ে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে। সেখানে উপস্থিত উপস্থিত জামুকার বিশেষ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইলামের জেরার মুখে তারা স্বীকার করেন, মোন্তাজ তাদের সঙ্গে যুদ্ধে অংশ নেন নাই।
তখন ওই মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকারে পক্ষে সাক্ষ্য দিতে আসায় ভর্ৎসনা করা হয়। এরপর রাজাকার মোন্তাজকে যাচাই-বাছাইস্থল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন কমিটির সদস্যরা।
মৃত রাজাকার ওসমানের পক্ষে তার ওয়ারিশ ফরম জমা দিতে এলে তিনিও জেরার মুখে সাক্ষ্য দিতে পারেন নাই। এ ঘটনায় জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
রাজাকার মোন্তাজ আলী বলেন, তিনি রাজাকার ছিলেন। এরপর তিনি আত্মসমর্পণ করেন এবং পক্ষ বদল করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তবে তার এই বক্তব্যের স্বপক্ষে কোনো সাক্ষ্য আনতে পারেননি তিনি।
এ ব্যাপারে যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, কমিটি বসে আরও অধিকতর সত্যাসত্য যাচাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইলাম কলেন, এরা দুজন আত্মস্বীকৃত ও তালিকাভুক্ত রাজাকার। এখানে তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকায় থাকার কোনো সুযোগ নাই। এতোদিন তারা কীভাবে বে-সামরিক গেজেটভুক্ত ছিল-সেটাই বিস্ময়।
ভয়েস টিভি/এসএফ