রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হয়েছে ইভিএমসহ নির্বাচনি সরঞ্জাম।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এবার নগরীর ৭৩৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। বুধবার সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হবে। আশা করছি, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে বিকাল ৪টায় নির্বাচন শেষ হবে। ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে পছন্দের প্রার্থীকে মেয়র নির্বাচিত করতে পারবেন নগরবাসী।’
এদিকে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশ্বাস দিলেও ভোট নিয়ে শঙ্কায় আছেন বিএনপি। তাদের দাবি, প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। পাশাপাশি ভোট কারচুপির অভিযোগও তুলেছেন তারা। অন্যদিকে, বিএনপি ভোট প্রশ্নবিদ্ধ করার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে—এমন শঙ্কায় আছে আওয়ামী লীগ। নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়েও তাদের মধ্যে রয়েছে উৎকণ্ঠা। তবে ভোটের দিন কোনও সহিংসতার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করে সেগুলোতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ভোট নিয়ে যে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল, তা কিছু অতি উৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তা ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডে বিলীন হয়ে গেছে। পুলিশ আমাদের দলীয় কর্মী, এজেন্টদের গ্রেফতার করে হয়রানি করছে। আমার ৫৭ জন এজেন্টকে তারা গ্রেফতার করেছে। ভোট নিয়ে আমরা আতঙ্কে আছি।’
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘তারা (বিএনপি) জনরায়কে ভয় পায়। তাই তারা নানা অজুহাতে নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। প্রচারণাকালে তারা আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে দেয় এবং নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর করে। এমনকি আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে চেয়েছিল তারা । কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীরা তাদের পাতানো ফাঁদে পা দেয়নি। এখন উল্টো ভিত্তিহীন নানা অভিযোগ তুলে নির্বাচন বানচালের শেষ চেষ্টা চালাচ্ছেন।’
২০২০ সালের ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ষষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় নির্বাচনের আট দিন আগে তা স্থগিত করা হয়। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি বিবেচনায় ২৭ জানুয়ারি ভোটের দিন ঠিক করে নির্বাচন কমিশন। এবার মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিএনপির দুই প্রার্থীর বাইরে আরও ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্য প্রার্থীরা হলেন এনপিপি’র আবুল মনজুর (আম), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন (মোমবাতি), স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা)।
এবার ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩। নারী ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন।
ভয়েস টিভি/এসএফ