Home বিশ্ব করোনার টিকা তৈরির দাবি রামদেবের

করোনার টিকা তৈরির দাবি রামদেবের

by Shohag Ferdaus
তৈরির

একপাশে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন, অন্যপাশে কেন্দ্রীয় সড়ক ও গঙ্গাপরিশোধনমন্ত্রী নীতিন গড়করিকে বসিয়ে বাবা রামদেব দাবি করলেন, করোনার ওষুধ তারা তৈরি করেছেন। তার নাম করোনেল। ওষুধের ক্লিনিকাল ট্রায়াল হয়েছে। সেখানে একশ শতাংশ ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে। কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রণালয় ওই ওষুধ ব্যবহারের ছাড়পত্র দিয়েছে।

রামদেবের দাবি, তাদের এই করোনার ওষুধ গবেষণা ভিত্তিক, তথ্যপ্রমাণ ভিত্তিক ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তৈরি। যত প্রোটোকল, যত মাপদণ্ড আছে, সব মানা হয়েছে। করোনেল নিয়ে নয়টি রিসার্চ পেপার প্রকাশিত হয়েছে। ১৬টি পেপার প্রকাশের অপেক্ষায়।

এই ওষুধ ২০২০ সালেও বের করা হয়েছিল। কিন্তু তখন আয়ুষ মন্ত্রণালয় তার বিক্রি স্থগিত রাখে। এখন তারা অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে বলে রামদেব জানিয়েছেন। রামদেবের সহযোগী বালকৃষ্ণের দাবি, তখন রিসার্চ পেপার প্রকাশিত হওয়া, তার রিভিউ নিয়ে সমস্যা ছিল। এখন সে সব হয়ে গেছে। তারা লাইসেন্স পেয়ে গেছেন। করোনার ওষুধ হিসাবে করোনেল ব্যবহার করা যাবে। শুধু ভারত নয়, ১৫৪টি দেশের জন্য অনুমোদনও তারা পেয়েছেন।

এবিপি নিউজ টিভি চ্যানেলে রামদেব দাবি করেছেন, এক কোটি মানুষ তো করোনেল বড়ি খেয়ে ঠিক হয়েছেন! ২৫-৩০ কোটি মানুষ প্রাণায়াম, কপালভাতি, অনুলোম-বিলোম করে (এগুলি যোগব্যায়াম) করে ও তুলসীর কাড়া পান করে ঠিক হয়েছেন। সরকারি সমীক্ষার আধারে তিনি এই দাবি করছেন। তিনি ভ্যাকসিনের বিরোধী নন। কিন্তু ২০২১-এ অ্যালোপ্যাথির বিকল্প তিনি দেবেন। বালকৃষ্ণ জানিয়েছেন, নতুন স্ট্রেইন রোখার জন্য নতুন ওষুধ আনছেন। তাদের ৩০০ গবেষক আছেন। তারা এই কাজ করছেন।

তবে অনেক চিকিৎসকই করোনার ওষুধ নিয়ে রামদেবের দাবি মানতে চাইছেন না।

ফুসফুসের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পার্থপ্রতিম বোস জানিয়েছেন, ‘এই ধরনের ওষুধের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থেকে যায়। তুলসী, মধু, ত্রিফলার মতো জিনিসের মধ্যে রোগ প্রতিরোধের কিছু ক্ষমতা থাকে। তা দিয়ে শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা বাড়ানো যায়। এই জিনিসগুলো আমিও ব্যবহার করি। কিন্তু করোনার ওষুধ মানে তো প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো নয়, রোগের প্রতিকার করতে হবে।’

কলকাতার চিকিৎসক সাত্যকি হালদার বলেছেন, ‘রামদেব যে দাবি করছেন, তার তথ্যপ্রমাণ সামনে আসা দরকার। করোনার ওষুধ যখন সারা বিশ্বে কেউ তৈরি করতে পারেননি, তখন রামদেব কী করে সেই ওষুধ বের করে ফেললেন তা জানা খুবই জরুরি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে তিনি যে কাজ করলেন তা অভূতপূর্ব, তাতে দেশের মুখ উজ্জ্বল তো হলোই না, বরং মুখ পুড়লো।’

রামদেব আগেও ক্যান্সার সারানোর দাবি করেছেন। এদিনও তিনি ডায়াবেটিসসহ নানা ধরনের রোগ সারানোর দাবি করেছেন। এদিন তিনি বিশেষজ্ঞদের উদ্দেশে বলেছেন, টাই পরে যে সব বিশেষজ্ঞ নিজেদের ঈশ্বর মনে করেন, তাদের ভ্রম আমি ভেঙে দিয়েছি।

কিন্তু অতীতেও চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা তার দাবির বিরোধিতা করেছেন। এখনো করছেন। রামদেব এই দাবি করার পর সামাজিক মাধ্যমেও বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। আর যেহেতু এবার করোনার ওষুধ তৈরির দাবি করা হয়েছে, তাই বিতর্ক তীব্র হয়েছে।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like