রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পদত্যাগ ও বিরোধীদলীয় নেতা কারাবন্দি অ্যালেক্সি নাভালনির মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন তার সমর্থকরা। ২৩ জানুয়ারি শনিবার রাজধানী মস্কোসহ শতাধিক শহরে এ সমাবেশ হয়েছে। এ সময় তিন হাজারেরও বেশি নাভালনি সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনিকেও গ্রেফতার করা হয়। খবর আল-জাজিরা।
মস্কোতে বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। এসময় নাভালনি সমর্থকদের মারধর ও টেনেহিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলতেও দেখা যায়। রাশিয়ার প্রশাসন বিক্ষোভকারীদের কঠোরভাবে দমনের ঘোষণা দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কোনো অননুমোদিত বিক্ষোভ ও উস্কানি সঙ্গে সঙ্গে দমন করা হবে।
এদিকে সাইবেরিয়ার ইয়াকুটস্ক শহরে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের তীব্র শীত উপেক্ষা করেও বিক্ষোভ করেন নাভালনি সমর্থকরা। এ বিক্ষোভ মিছিল থেকেও আটক করা হয় অনেক আন্দোলনকারীকে। এরপরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
পর্যবেক্ষণকারী বেসরকারি সংস্থা ওভিডি ইনফোর বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার শতাধিক শহরে বিক্ষোভ হয়। এসময় কমপক্ষে তিন হাজার ১০০ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া, আইনজীবী ও মুখপাত্রও রয়েছেন। যারা তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রশাসনের কড়া নির্দেশের পরেও শনিবার বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। রাশিয়ার শতাধিক শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে মস্কোর পাশকিন স্কয়ারে। সেখানে ৪০ হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে চোর আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেয়। তবে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি- বিক্ষোভকারীর সংখ্যা মাত্র চার হাজার।
এসময় বিক্ষোভকারীরা নাভালনির মুক্তি এবং পুতিনের পদত্যাগের দাবি করে স্লোগান দেয়। বিক্ষোভে অংশ নেয়া এক নারী বিবিসিকে জানিয়েছেন, রাশিয়া ক্রমে কারাগারে পরিণত হচ্ছে। এজন্য তিনি প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছেন।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া ৫৩ বছর বয়সী সের্গেই রাদচেনকো বলেন, ভয় নিয়ে বসবাস করতে করতে আমি ক্লান্ত। আজ শুধু নাভালনির জন্য নয়, আমার সন্তানদের জন্য রাস্তায় নেমেছি। কারণ এদেশে কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
গত ১৭ জানুয়ারি বার্লিন থেকে রাশিয়ায় ফিরে আসার পর নাভালনিকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে প্যারোলে মুক্তির শর্তভঙ্গের অভিযোগ করেছে প্রশাসন। গত বছরের আগস্টে তাকে রাশিয়ায় বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপর থেকে চিকিৎসার জন্য তিনি বার্লিনে অবস্থান করছিলেন।
নাভালনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সবচেয়ে শক্তিশালী সমালোচক। তার সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন। প্রায় ৬০টি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভয়েস টিভি/এসএফ