Home খেলার খবর রোমাঞ্চকর জয়ে ফাইনালে নিউজিল্যান্ড

রোমাঞ্চকর জয়ে ফাইনালে নিউজিল্যান্ড

by Shohag Ferdaus

১৬৬ রানের জবাব দিতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়েছিল নিউজিল্যান্ড। দলের সেরা দুই ব্যাটার কেন উইলিয়ামসন ও মার্টিন গাপটিল যখন ফিরলেন নিউজিল্যান্ডের দলীয় রান তখন মাত্র ১৩। কে ভেবেছিল ইংল্যান্ডের দুর্দান্ত বোলিং আক্রমণ সামলে সেখান থেকে ম্যাচ জিতে নিবে নিউজিল্যান্ড! আবুধাবির জায়েদ স্টেডিয়ামে ঘটেছে সেটিই। ড্যারিল মিচেলের দুর্দান্ত প্রতিরোধ ও শেষ দিকে জেমি নিশামের ঝড়ো এক ইনিংসের কল্যাণে পাঁচ উইকেটের অবিস্মরণীয় জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড।

এই জয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল নিউজিল্যান্ড। কিউইদের বুকে জেঁকে বসা একটা জগদ্দল পাথরও হয়তো নেমে গেল! গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ফাইনালে উঠেছিল নিউজিল্যান্ড। ছুয়ে দেখার দূরত্বে গিয়েও শিরোপা জেতা হয়নি এই ইংল্যান্ডের কারণেই।

বেন স্টোকসের অতিমানব হয়ে উঠা আর শেষ ওভারে ওভারথ্রো থেকে ইংল্যান্ডের পাঁচ রান পাওয়াতে শিরোপার কাছে গিয়েও শিরোপা জেতা হয়নি নিউজিল্যান্ডের। আজ সেই তাদেরকেই হারিয়ে আরেকটা বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠা নিউজিল্যান্ডের জন্য নিশ্চয় বাড়তি আনন্দ!

১০ নভেম্বর ১৬৬ রানের জবাব দিতে নেমে ক্রিস ওকসের বলে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ৪ রান করে ফেরেন মার্টিন গাপটিল। খানিক বাদে সেই ওকসের বলেই কেন উইলিয়ামসন ফিরলে কিউইদের কোমড় ভেঙে যায়। কিন্তু তারপর ডেভন কনওয়েকে নিয়ে কী সুন্দরভাবেই না দলকে একটু একটু করে টেনে তুললেন মিচেল।

দলের সেরা দুই ব্যাটার পরপর ফিরে গেলে মিচেল-কনওয়ে প্রথমে বড় শট খেলতে চাননি। তবে উইকেট ধরে রাখার পাশাপাশি রানের চাকাও সচল রেখেছিলেন দুজন। তাতে পায়ের নিচে মাটি যখন একটু সচল হয়েছে তখন হাঁকাতে চেয়েছেন দুজনই।

কনওয়ে অবশ্য তাতে খুব বেশি সফল হতে পারেননি। ৩৮ বলে ৫টি চার ১টি ছয়ে ৪৬ রান করে ফিরেছেন দ্রুত রান তুলতে গিয়েই। তবে মিচেল দারুণভাবে সফল। শেষ দিকে মাত্র ১১ বল খেলে ২৭ রান করে ম্যাচের গতিপথই পরিবর্তন করে দেন জেমি নিশাম।

১৯ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য ১৬৭ রান তুলে ফেলে নিউজিল্যান্ড। মিচেল তখন ৪৭ বলে ৭২ রানে অপরাজিত ছিলেন। তার ইনিংসে চারের মার ৪টি, ছক্কাও মেরেছেন ৪টি। ইংল্যান্ডের হয়ে দুটি করে উইকেট দখল করেছেন লিয়াম লিভিংস্টোন ও ক্রিস ওকস।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতে ধুঁকেছে ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের দুই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদির বিপক্ষে দ্রুত রান তুলতে পারেনি জেসন রয়হীন ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটি। চোটের কারণে ফর্মে থাকা রয় সেমিফাইনাল খেলতে পারেননি। তার জায়গায় জনি বেয়ারস্টো ওপেনিংয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেননি।

টিম সাউদির বলে স্বাচ্ছন্দে খেলতে পারেননি বেয়ারস্টো। শেষ পর্যন্ত অ্যাডাম মিলনের বলে কেন উইলিয়ামসনের অসাধারণ এক ক্যাচ হওয়ার আগে ১৭ বলে করেছেন ১৩ রান। ফর্মে থাকা অপর ওপেনার জস বাটলারও আজ ইংলিশদের প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি।

বিশ্বকাপের প্রায় প্রতি ম্যাচেই শুরুতে ঝড় তোলা বাটলার আজ অনেকক্ষণ উইকেট থাকলেও মারকাটারি ব্যাটিং করতে ব্যর্থ। ২৪ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ২৭ রান করে যখন ফিরলেন ইংল্যান্ডের দলীয় রান তখন ৫৩। তিনে নামা ডেভিড মালান ও চারে নামা মইন আলিও শুরুতে দ্রুত রান তুলতে পারেননি। সেই সময়টাতে মনে হচ্ছিল, সেমির লড়াইয়ে ইংলিশদের হয়তো অল্পতেই আটকে রাখতে পারবে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু মইন আলি সময়ের সঙ্গে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন এবং শেষ দিকে লিয়াম লিভিংস্টোন ছোট ঝড় তুললেন বলে চ্যালেঞ্জিং স্কোরই পেয়েছে ইংল্যান্ড।

চাপের মধ্যে তৃতীয় উইকেট জুটিতে মইন আলি ও মালানের ৬৩ রানের জুটিটি ইংল্যান্ডকে শক্ত ভিত্তি দিয়েছে। তার ওপর দাঁড়িয়ে শেষ দিকে ঝড় তুলতে পেরেছেন মইন, লিভিংস্টোন।

২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৬৬ রান ‍তুলেছে ইংল্যান্ড। মইন আলি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৩৭ বলে ৫১ রান করে। তার ইনিংসে চারের মার ৩টি, ছক্কা ২টি। মালান ৩০ বলে ৪টি চার ১টি ছয়ে ৪১ রান করেন। লিভিংস্টোন ১০ বলে করেন ১৭ রান।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন টিম সাউদি, অ্যাডাম মিলনে, ইশ শোধি ও জেমি নিশাম।

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like