Home বিশ্ব মিয়ানমার মানচিত্র থেকে মুছে দিয়েছে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গ্রাম

মিয়ানমার মানচিত্র থেকে মুছে দিয়েছে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গ্রাম

by Shohag Ferdaus
রোহিঙ্গা মুসলমানদের

মিয়ানমার সরকার সেদেশের মানচিত্র থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ‘কান কিয়া’ নামের গ্রামটিকে মুছে ফেলেছে। এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের ম্যাপিং ইউনিট। তিন বছর আগে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের এই গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পর পুরো গ্রাম বুলডোজার দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছিল।

জাতিসংঘের ম্যাপিং ইউনিট বলেছে, গত বছর মিয়ানমার সরকার দেশের নতুন যে মানচিত্র তৈরি করেছে সেখানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের কান কিয়া গ্রামের অস্তিত্ব নেই। মানচিত্র থেকে গ্রামটির নাম ‍মুছে ফেলা হয়েছে।

মিয়ানমারে জাতিসংঘের ‘ম্যাপিং ইউনিট’ ২০২০ ‍সালে দেশটির নতুন ম্যাপ বানিয়েছে। মিয়ানমারের সরকারি মানচিত্রের ভিত্তিতে জাতিসংঘের ‘ম্যাপিং ইউনিট’ নিজেদের ম্যাপ তৈরি করে। জাতিসংঘের অধীনে নানা সংস্থা ওই ম্যাপ ব্যবহার করে।

তারা জানান, নতুন ‍মানচিত্রে গুঁড়িয়ে ফেলা গ্রামের নাম আর নেই। বরং ওই জায়গাটিকে এখন কাছের মংডু শহরের বর্ধিত অংশ বলা হচ্ছে।

২০১৭ সালের অভিযানের সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনী কান কিয়ার মত অন্তত চারশ’ গ্রাম ধ্বংস করেছে বলে জানায় নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’। তারা ভূউপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে। ধ্বংস করা গ্রামগুলোর মধ্যে অন্তত এক ডজন গ্রামের নাম এখন মানচিত্র থেকেও মুছে দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটি উল্লেখ করেছে।

নাফ নদী থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে কান কিয়া গ্রামে কয়েকশ’ মানুষের বাস ছিল। ২০১৭ সালে রাখাইনের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে মিয়ানমারের সেনা অভিযানের সময় কান কিয়ায় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে সেখানকার বাসিন্দারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান। পুরো গ্রাম আগুনে পুড়ে যায়। পোড়া শরীর নিয়ে গ্রামের যেটুকু চিহ্ন দাঁড়িয়ে ছিল সেটাও বুলডোজার দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়। জাতিসংঘ একে ‘জাতিগত নিধন’ বলে ‍অভিহিত করেছে।

রাখাইনে সেনা ‍অভিযানের সময় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের অনেকের শরীরে গুলি বা আগুনে পোড়া ক্ষত ছিল। ওই শরণার্থীদের বর্ণনায় মিয়ানমার সেনাদের সাধারণ মানুষের ওপর ভয়াবহ নিপীড়নের চিত্র ফুটে উঠে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের সেনাদের বিরদ্ধে ‘গণহত্যার’ অভিযোগে শুনানি চলছে।

কান কিয়া গ্রামটি আগে যেখানে ছিল সেখানে এখন ডজনের বেশি সরকারি ও সামরিক ভবন গড়ে উঠেছে। এমনকি ভূউপগ্রহের ছবিতে পুলিশ ঘাঁটির জন্য দেয়া আঁকাবাঁকা বেড়াও দেখতে পাওয়া যায়। ‘গুগল আর্থ’ এ ওই ছবিগুলো দেখতে পাওয়া যায়। ‘প্ল্যানেট ল্যাব’ থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছেও কয়েকটি ছবি পাঠানো হয়েছে।

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like