Home জাতীয় লকডাউন না দেওয়ার আহবান এফবিসিসিআই সভাপতির

লকডাউন না দেওয়ার আহবান এফবিসিসিআই সভাপতির

by Mesbah Mukul
দেশে আবারও বাড়ছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ। এ অবস্থায় ফের লকডাউন হতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবরে জানা গেছে। এমতাবস্থায় করোনা বাড়তে থাকলেও লকডাউনের মত কঠোর বিধিনিষেধ না দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে এখন কোনো দেশ লকডাউন দিচ্ছে না। কারণ লকডাউনের কারণে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। গত বছর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার কারণে আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও আমরা জিডিপির ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। অথচ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ পৃথিবীর অনেক দেশে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।’
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রভাবে পুরো বিশ্বের মত বাংলাদেশেও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ কিছু বিধিনিষেধ ফিরিয়ে এনেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার থেকে উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ট্রেন, বাস এবং লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নেওয়া যাবে। রেস্তোরাঁয় বসে খেতে, আবাসিক হোটেল থাকতে দেখাতে হবে টিকা সনদ। ১২ বছরের বেশি বয়সের শিক্ষার্থীদের টিকা সনদ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
২০২০ সালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে মার্চের শেষ দিকে দেশজুড়ে লকডাউন জারি করা হয়। যা দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলে। সেই লকডাউনে জরুরি সেবার পরিবহন এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যে কারও চলাচল ছিল বারণ। সব অফিস আদালতের পাশাপাশি কল কারখানাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
পরিস্থিতির উন্নতিতে পরে সেই বিধি-নিষেধ শিথিল হয়। ডেল্টা সংক্রমণের পর গত বছরের এপ্রিল থেকে অগাস্ট অবধি বিভিন্ন সময় লকডাউনের বিধি-নিষেধ ছিল। তবে ‘জীবন ও জীববিকার ভারসাম্য’ রক্ষায় এ দফায় কল কারাখানা খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।
এরপর সংক্রমণের হার দ্রুত কমে এলে গত বছরের সেপ্টেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলে; জীবনযাত্রা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসে।
তবে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টির পর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার এক দিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা ২৪শ ছাড়িয়ে গেছে, সেই সঙ্গে দৈনিক শনাক্তের হার পৌঁছেছে ৯ শতাংশের কাছাকাছি।
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, “নতুনভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পাওয়ার এই সময়ে লকডাউন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ী সমাজ।”
গতবারের লকডাউনের কারণে পোশাক কারখানাগুলোতে এখনও ১৫ শতাংশ শ্রমিক সংকটে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “গত বছর ১৩ থেকে ১৪ দিন পোশাক কারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা চাকরি ছেড়ে বাড়ি গিয়ে আর ফিরে আসেনি। সুতরাং লকডাউনই সমাধান নয়, এর কারণে ক্ষতি হচ্ছে।”
তার বদলে স্বাস্থ্য সচেতনতার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “সরকার যে টিকা ছাড়া হোটেল রেস্টুরেন্টে যাওয়া কিংবা সমাবেশ বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে, এটাকে আমি সমর্থন করি। আমাদের জোর দিতে হবে টিকা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতায়।”
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব। ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ভয়েসটিভি/আরকে

You may also like