কলেজ শিক্ষকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে বিশেষ বার্তা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। রাষ্ট্র, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো বিষয়, ছবি, অডিও ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট বা আপলোড করতে পারবেন না কলেজের শিক্ষকরা। একই সঙ্গে এ জাতীয় পোস্টে কমেন্ট, লাইক এবং শেয়ার করতে পারবেন না তারা।
৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
বৃহস্পতিবারের নির্দেশনায় বলা হয়, যুগোপযোগী ও আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষা পাঠদান ও নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে অনেক ভূমিকা পালন করা হয়। অনলাইনে ক্লাস, শিক্ষক ও ছাত্রদের মাঝে সম্পর্ক তৈরি করা এবং রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে অগ্রযাত্রার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো ধরনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও অপ্রীতিকর কার্যকলাপ যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে দৃষ্টি রাখার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিস্তারিত নির্দেশনা তুলে ধরা হয়।
ছাত্র ও শিক্ষকদের মাঝে সচেতনতা তৈরির জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে মাউশির নির্দেশনাগুলো-
১. সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনো পোস্ট, ছবি ভিডিও বা অডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। একই সঙ্গে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো সার্ভিস বা পেশাকে হেয় প্রতিপন্ন করে, এমন কোনও পোস্ট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনো তথ্য উপাত্ত প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন বা ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি পরিপন্থী কোনো তথ্য উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এরূপ কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩) জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো লেখা, অডিও বা ভিডিও প্রকাশ বা শেয়ার করা এবং ভিত্তিহীন অসত্য বা অশ্লীল তথ্য প্রচার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃপক্ষ সামাজিক ও যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের গাইডলাইন, চাকরির বিধিবিধানাবলী এবং এ সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে কর্মকর্তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করবেন।
৫. প্রতিষ্ঠান প্রধানরা কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের বিধি ভঙ্গ করলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং প্রয়োজনে তদন্ত করে এর প্রমাণ আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে অধিদফতরকে অবহিত করবেন।
৬) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় বিভিন্ন গ্রুপ বা পেইজে অ্যাডমিনরা পোস্ট/কমেন্ট ইত্যাদি অনুমোদনে করার সময় সরকারি নীতিমালার পরিপন্থী স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান, দফতর ও সংস্থার বিপক্ষে অবস্থানকারী কোনও পোস্ট অনুমোদন করবেন না। অন্যথায় এডমিন এবং পোস্টদাতা উভয়েই সরকারি বিধি অনুযায়ী অভিযুক্ত হবেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের নির্দেশিকা জারি করে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে অপপ্রচার চালালে দুই জন বেসরকারি শিক্ষকের এমপিও স্থগিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ব্যক্তি স্বার্থে যেন দলের মূল্যবোধ ক্ষুণ্ণ না হয় : কাদের
ভয়েস টিভি/এসএফ