প্ল্যাটফর্ম চত্বরে হকারের ভিড়। রংচটা দেয়াল। ইতিউতি খসে পড়ছে পলেস্তারা। পশ্চিমবঙ্গের শিয়ালদহ স্টেশনের এই চেনা ছবি বদলে যাচ্ছে। নতুন রূপে সেজে উঠছে গোটা স্টেশন চত্বর। শপিং মল থেকে রেস্তরাঁ। বিমানবন্দরের ধাঁচে সেবা মিলবে এগজিকিউটিভ লাউঞ্জ থেকে সুইট রুম- পাঁচতারা হোটেলের মতোই।
করোনার কারণে লোকাল এবং দূরপাল্লার রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বিশেষ কিছু ট্রেন চললেও স্টেশনে তেমন ব্যস্ততা নেই। ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতি দিন গড়ে ১২ লক্ষ যাত্রীর চাপ সামলাতে হত শিয়ালদহ স্টেশনকে। তার ওপর দৈনিক গড়ে ৯১৯টি ট্রেনের চাপ। চাতালে হরেক জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসতেন হকাররা। অপরিচ্ছন্ন, যত্রতত্র দেয়ালে পানের পিকের দাগ।
এগজিটিউটিভ লাউঞ্জে তৈরি হয়েছিল আগেই। তা আরও আকর্ষণীয় করে তোলা হচ্ছে। নিউ নর্মালে ট্রেন ধরতে এসে যাত্রীরা চাইনিজ থেকে তন্দুরি চেখে দেখতে পারবেন। তার জন্য পয়সাও খুব বেশি খরচ করতে হবে না। কর্তৃপক্ষের দাবি, দাম রাখা হয়েছে সাধারণের সাধ্যের মধ্যেই। মাত্র ৫০ টাকায় বিলাসবহুল লাউঞ্জে এক ঘন্টা কাটানো যাবে।
স্টেশনে ঢুকে ডিসপ্লে বোর্ডে যদি দেখা যায়, ট্রেনের দেরি আছে, তাহলে যাত্রীরা এসি ডরমেটরি, টু-বেড, ফোর-বেড অথবা এসি সুইটে সময় কাটাতে পারবেন। ১২ এবং ২৪ ঘন্টার জন্য ঘরগুলির ভাড়া ৫০০ থেকে ৩,০০০ টাকা। ভারী ব্যাগ নিয়ে আর দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না। স্টেশনেই মুশকিল আসান। স্টেশনের মূল ফটক দিয়ে ঢুকেই দোতলায় পাঁচতারা বন্দোবস্ত।
১ নম্বর গেটের দিকে সিঁড়ির দু’পাশে দোকানের ভিড়ে হাঁটাচলাই দায় ছিল। পাশে ছিল একটি টিকিট কাউন্টারও। সেটিও আর থাকছে না। ওই জায়গাটি ঘিরে একটি সংস্থাকে ভাড়া দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সব টিকিট কাউন্টারকে একই জায়গায় আনারও চেষ্টা চলছে।
দক্ষিণ শাখার প্ল্যাটফর্মের কাছে একটি শপিংমল তৈরি হচ্ছে। সেখানে নামীদামি সংস্থার রেস্তোরাঁও থাকছে। বিভিন্ন ছোট ছোট দোকান ভাড়া দেয়া হয়েছে। অনেকটা বিমানবন্দরের ধাঁচে। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে মেট্রোর ঢোকা-বেরনোর পথও তৈরি হচ্ছে। সে কথা মাথায় রেখেই গোটা বিষয়টি সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। স্টেশনের দেয়ালে শিল্পীদের আঁকা ছবি অন্য মাত্রা যোগ করেছে।
শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার শৈলেন্দ্র প্রতাপ সিংহ জানান, চেষ্টা করছি নতুন অনেক কিছু তৈরি করার। যাত্রীদের স্বাচ্ছ্যন্দ এবং পরিষেবাই রেলের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। পাল্টে যাচ্ছে প্ল্যাটফর্ম নম্বরও। যাতে সহজে ট্রেন ধরতে পারেন যাত্রীরা।
ভয়েস টিভি/এসএফ