Home ধর্ম সহপাঠীদের নামাজ দেখে ইসলাম গ্রহণ

সহপাঠীদের নামাজ দেখে ইসলাম গ্রহণ

by Amir Shohel

ইকুয়েডরের নাগরিক মনিকার জন্ম একটি ক্যাথলিক পরিবারে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলেজে পড়ার সময় মুসলিম সহপাঠীদের নামাজ আদায় করতে দেখে কৌতূহলী হন। এরপর দীর্ঘদিন ইসলাম সম্পর্কে অধ্যয়ন করেন, মুসলিমদের সঙ্গে মেশেন, ইসলামবিষয়ক কর্মশালায় অংশ নেন। অবশেষে ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। মুসলিম হওয়ার পর মোনা ইসলাম নাম ধারণ করেন।

নিজের ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে মোনা বলেন, আমি ইকুয়েডরের একটি ক্যাথলিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। আমার পরিবার কখনো ধার্মিক ছিল না। তারা কখনো চার্চেও যেত না। তবে আমার নানু, যিনি আমাকে খুব বেশি ভালোবাসতেন তাঁর পরামর্শে আমি একটি ক্যাথলিক হাই স্কুলে ভর্তি হই। এ স্কুলে আমি ধর্ম ও ধর্মের আধ্যাত্মিক দিকগুলো সম্পর্কে অবগত হই। কয়েক বছর পর আমি যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলেজে ভর্তির সুযোগ লাভ করি, যেখানে বেশ কয়েকজন মুসলিম শিক্ষার্থী ছিল। আমি ইসলাম সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতাম না। তবে তাদের প্রার্থনা করতে দেখতাম। এভাবে কাউকে কখনো প্রার্থনা করতে দেখিনি। মুসলিম সহপাঠীদের দেখে মনে হতো তারা প্রার্থনা করে প্রশান্তি পায় এবং তারা গভীর বিশ্বাস থেকেই তা করছে।

মূলত তাদের প্রশান্ত চেহারা সর্বপ্রথম আমাকে ইসলামের প্রতি মনোযোগী করে। এরই মধ্যে আমি লেখাপড়া শেষ করে ঘরে ফিরি এবং সিদ্ধান্ত নিই, ইসলাম সম্পর্কে আরো বেশি জানব। অবশ্য আমি সব সময় অন্যদের বিশ্বাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ছিলাম। ঘটনাক্রমে আমি তখন খ্রিস্ট ধর্ম সম্পর্কে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। এ সময় মসজিদে যাতায়াত করে এমন কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। অবশেষে আমাকে তারা এক বোনের কাছে নিয়ে যায়, যিনি আগ্রহীদের ধর্মান্তরের আগে ইসলাম সম্পর্কে জানাতেন।

আমি তাঁর ক্লাসে অংশগ্রহণ শুরু করি। এক মাস পর আমি বুঝতে পারি ইসলাম আমারই ধর্ম। ক্যাথলিজমসহ অন্যান্য ধর্মের সঙ্গে তুলনা করার পর স্পষ্ট হয়, ইসলাম একটি পরিশুদ্ধ ধর্ম, শান্তিপূর্ণ জীবনের পথপ্রদর্শক। আমি ইসলাম ধর্মে এমন কোনো বিষয় খুঁজে পাইনি, যার ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করা যায়। আমার আরো ভালো লাগে, যখন আমি দেখি কোরআন-হাদিসে বর্ণিত বিষয়গুলো পূর্ব থেকেই আমি অনুসরণ করে আসছি—যেগুলো ক্যাথলিক থাকা অবস্থাতেই আমি নিজের করণীয় ও বর্জনীয় হিসেবে ঠিক করেছিলাম। মানুষ ইসলাম ধর্মকে কঠোর মনে করে, অথচ আমার কাছে তা মনে হয় না। আমি মনে করি, ইসলামের বিধানগুলো যথাযথ। আল্লাহ পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন তার প্রত্যাশা কী। আর সত্য, সুখ, আত্মতৃপ্তির মতো জিনিসগুলো পেতে অস্বাভাবিক কোনো জিনিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রয়োজন নেই; বরং আল্লাহর নির্দেশনা মান্য করাই যথেষ্ট। তবে মুসলিমদের উচিত ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের আরো বেশি নিকটবর্তী হওয়া এবং তাদের সামনে ইসলামের সঠিক পরিচয় তুলে ধরা। নওমুসলিমদের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করা। যা-ই হোক, আল্লাহর অনুগ্রহে আমি কলেমা শাহাদাত পাঠ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি।

ইসলামিক ওয়েব থেকে মো. আবদুল মজিদ মোল্লার ভাষান্তর।

You may also like