Home সারাদেশ দুধের বদলে ময়দার পানি; ভাগ্য খুলেছে সেই সাফিয়া-মারিয়ার

দুধের বদলে ময়দার পানি; ভাগ্য খুলেছে সেই সাফিয়া-মারিয়ার

by Newsroom
সাফিয়া-মারিয়ার

এবার ভাগ্য খুলেছে সেই যমজ শিশু সাফিয়া-মারিয়ার । বাবার আর্থিক অনটনে পড়ে দুধের বদলে ময়দা গোলা পানি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে তারা। ভর্তি করা হয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে। এরপরই মানবিক এ ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। তবে এখন আর দুধের অভাব নেই তাদের। রয়েছে বাসস্থানের সমস্যা। তবে সেটিও দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী জানান, শিশু সাফিয়া ও মারিয়ার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি তাদের নিজস্ব জমি আছে তবে ঘর নেই। তারা খুব অসহায় পরিবার। তাদের নিজস্ব জমি রয়েছে জানার পরই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাদের একটি ঘর তৈরী করে দেওয়ার। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রকল্প কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। তাছাড়া মঙ্গলবার তাদেরকে সরকারের রাজস্ব খাত থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা সহায়তা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যে দুই কক্ষের ঘর বরাদ্দ আসবে প্রথম ধাপেই দুই শিশু মনির জন্য দুই কক্ষের একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন- বদলে যাচ্ছে সেই শিয়ালদহ

শিশু সাফিয়া ও মারিয়ার বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুর গ্রামে। বাবা আনিসুর রহমান ভ্যানচালক। মা স্বপ্না বেগম গৃহিনী। স্বপ্না বেগম জানান, ইউএনও স্যার আমাদের ডেকে নিয়ে আমাদের পরিবার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়েছেন। সবকিছু শোনার পর তিনি দশ হাজার টাকা সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া ওদের বাবার পৈত্তিকসুত্রে পাওয়া দুই শতক জমির উপর ঘর তৈরী করে দিবেন বলেছেন স্যার। আমরা খুব খুশি হয়েছি।

বাবা আনিসুর রহমান বলেন, আমি ভ্যানচালক মানুষ। অভাবের কারণে দুই যমজ বাচ্ছাদের দুধের বদলে ময়দা গোলা পানি খাওয়াতাম। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তির পর গত ৩১ জুলাই ঘটনাটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর সাতক্ষীরা ডিসি স্যার, পুলিশ সুপার স্যারসহ বিভিন্ন হৃদয়বান মানুষ সহযোগিতা করে। যারা সহযোগিতা করেছেন আমি তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে শিশু দুটিকে চিকিৎসা দেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. অসীম কুমার সরকার। তিনি বলেন, ময়দা গোলা পানি খেয়েই মূলত অপুষ্টিজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল শিশু দুটি। তবে চিকিৎসার পর এখন শিশু দুটি সুস্থ হয়েছে। বাচ্ছাদের জন্য যে স্বাভাবিক খাবার এখন তারা সেগুলো খেতে পারবে।

অন্যদিকে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকর্মীদের সহযোগিতায় উদ্যোগ নিয়েছেন পরিবারটিকে স্বাবলম্বী করার। দৈনন্দিন রোজগারের জন্য শিশু দুটির বাবাকে একটি ইজিবাইক কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন তিনি সম্মিলিতভাবে। সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষক জানান, শিশু দুটির বাবাকে ইজিবাইক কিনে দেওয়ার পাশাপাশি বাচ্ছাদুটির খাওয়ার জন্য প্রতিমাসে কিছু টাকাও দেওয়া হবে।

ভয়েস টিভি/ডিএইচ

You may also like