Home বিশ্ব আবারও জেগে উঠেছে সিনাবাং আগ্নেয়গিরি

আবারও জেগে উঠেছে সিনাবাং আগ্নেয়গিরি

by Newsroom
সিনাবাং আগ্নেয়গিরি

আবারো জেগে উঠেছে ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট সিনাবাং আগ্নেয়গিরি। ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল ভলক্যানিক এজেন্সি ৮ আগস্ট হুশিয়ারি দেয়, উত্তর সুমাত্রা দ্বীপের এই আগ্নেয়গিরি থেকে ছাই আর ধোঁয়া বেরোচ্ছে। আর ক্ষণে ক্ষণে বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে আশপাশের গ্রাম। কালো ধোঁয়া আর ছাইয়ের স্তর বাতাসে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার বেশ কটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে ভয়ঙ্কর এই মাউন্ট সিনাবাং।

ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রার কারো উপত্যকায় লেক টোবা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে মাউন্ট সিনাবাং আগ্নেয়গিরি। ৮ হাজার ৭০ ফুট উচু এই আগ্নেয়গিরি থেকে গত শনিবার থেকে প্রবল বেগে গ্যাস ও পোড়া ছাই উদ্গীরণ হচ্ছে। কালো হয়ে যায় গোটা আকাশ। মাত্র ২০ মিনিটেই আশপাশের গ্রাম ঢেকে গেছে ধোঁয়ায়। রাস্তায় পুরু হয়ে জমে ছাইয়ের স্তূপ। এরইমধ্যে গ্রাম থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আর গোটা এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে রেড জোন হিসেবে। এখনো মাঝে মাঝেই ফুঁসে ওঠছে মাউন্ট সিনাবাং।

দেশটির আবহাওয়া অফিস জানায়, ১০ আগস্ট স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে আবারো বিকট বিস্ফোরণ হয়। সঙ্গে সঙ্গে প্রায় ১৬,৪০০ ফুট উঁচুতে ছিটকে ওঠে ছাই, ধোঁয়া, পাথর, লাভা। শুধু ছাইয়ের কুণ্ডলীই পর্বতের শিখর থেকে পাঁচ কিলোমিটার উঁচুতে উঠেছে। আগ্নেয়গিরিতে বিস্ফোরণের পরই ভূমিকম্প হয় উত্তর সুমাত্রায়। ভূতত্ত্ববিদরা সিনাবাং-এ লেভেল-৩ সতর্কতা জারি করেছে। আরও বিস্ফোরণ এবং অগ্ন্যুত্পাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

৮ আগস্ট শনিবার প্রথম বিস্ফোরণের পরই আগ্নেয়গিরির মূল স্থানের তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধ অঞ্চলজুড়ে যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেদিনের বিস্ফোরণের পর আগ্নেয়গিরির পাঁচ কিলোমিটারের ভেতর থেকে সরে থাকতে সবাইকে নির্দেশ দেয় প্রশাসন।

এরআগে ১৯১২ সালে প্রথম ফুঁসে ওঠে সিনাবাং। এরপর সুপ্ত হয়েই ছিল এই আগ্নেয়গিরি। কিন্তু দু বছর পর, ২০১০ সালের আগস্টে ভয়ঙ্কর তাণ্ডব শুরু করেছিলো সিনাবাং। একের পর এক বিস্ফোরণ, প্রবল লাভাস্রোত, ধোঁয়া বেরিয়ে আসে আগ্নেয়গিরির মুখ থেকে। আর বাতাসে দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে গ্যাস-ছাইয়ের স্তর। সেবার ৬ হাজার গ্রামবাসীকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হয় নিরাপদ স্থানে।

সেখানেই শেষ নয়। ওই বছরেরই সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ফের বিস্ফোরণ ঘটায় সিনাবাং। সেসময় প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে হয়। ২০১৩-১৪ সালেও অগ্ন্যুত্পাত ঘটায় মাউন্ট সিনাবাং। তবে ২০১৬ সালে বিস্ফোরণটি ছিলো ভয়ঙ্কর। ওই অগ্ন্যুত্পাতে সাত জনের মৃত্যুর খবর মেলে। ছাই বৃষ্টি হয়েছিলো আশপাশের গ্রামে। ঘরবাড়ি, গাছপালা ঢেকে যায় ছাইয়ের স্তরে। বিচ্ছিন্ন হয়েছিলো বিদ্যুত্ সংযোগ। প্রায় ১৮ হাজার গ্রামবাসীকে কয়েক সপ্তাহ ত্রাণ শিবিরে রাখতে হয়।

লেখক: ফেরদৌস মামুন, সাংবাদিক

You may also like