Home সারাদেশ আত্মহত্যার পরও সুদের টাকার জন্য ফোন!

আত্মহত্যার পরও সুদের টাকার জন্য ফোন!

by Newsroom

৫ বছরের ৭ লাখ টাকার সুদ হিসেবে পরিশোধ করেছেন ১১ লাখ টাকা। কিন্তু এরপরও আসলের জন্য চাপ দিতে থাকেন সুদ ব্যবসায়ী। নির্ধারিত সময়ে সুদ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সুদ ব্যবসায়ীর অপমানে আত্মহত্যা করেছেন বরগুনার বস্ত্র ব্যবসায়ী পলাশ (৩৭)।

৭ নভেম্বর শনিবার ভোরে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউয়িনের নলী বাজারের বাসার পেছনে মেহগনি গাছে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে। বেলাল হোসেন পলাশ নলটোনা ইউনিয়নের গর্জনবুনিয়া এলাকার মৃত শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে। তিনি নলী বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।

আত্মহত্যা করেও রেহাই মেলেনি। মৃত্যুর পরও টাকা জন্য ফোন দিয়েছেন সুদ ব্যবসায়ী।

পলাশের পরিবার জানায়, ২০১৫ সালে বরগুনার পল্লী চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম সৌরভের কাছ থেকে প্রথমে তিনলাখ টাকা সুদ নেন। এরপর পর্যায়ক্রমে এভাবে তিনি ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা সুদ নেন। তিনি ওই টাকার সুদ বাবদ ১১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন।

পলাশের স্ত্রী রোকসানা বেগম জানান, আসল টাকার ২৬ হাজার কিস্তি পরিশোধের জন্য চাপ দেন সৌরভ। গত বুধবার সৌরভকে ওই টাকা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্ত টাকা পরিশোধ না করায় বৃহস্পতিবার পলাশকে অকথ্য গালাগাল করেণ ওই সুদ ব্যবসায়ী। এক পর্যায়ে অনুনয় বিনয় করে শনিবার পর্যন্ত সময় নেন পলাশ। শনিবার ফজরের নামাজের পর সৌরভ টাকা চেয়ে পলাশকে ফোন দিয়ে গালিগালাজ করে। অপমানে লজ্জায় ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন পলাশ।

তিনি আরও জানান, সাড়ে ৭টার দিকে আবারো পলাশের মুঠোফোনে কল করে টাকা চায় সুদ ব্যবসায়ী সৌরভ। পলাশের স্ত্রী রোখসানা ফোন রিসিভ করে সৌরভকে জানায়, পলাশ আত্মহত্যা করেছে।

রোখসানা বেগম বলেন, ‘সৌরভের আসল সাত লাখের বিপরিতে আমার স্বামী ১১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে। এরপরও সে আসল টাকার জন্য আমার স্বামীকে গালিগালাজ করেছে। অপমানে আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছে। আমি এই সুদ ব্যবাসীয় সৌরভের বিচার চাই। আমার ছোট ছোট দুটো বাচ্চা নিয়ে এখন আমি দিশেহারা।’

এ ঘটনার পর ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছে পল্লী চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম সৌরভ। ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পলাশের মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় মৃত পলাশের জামার পকেট থেকে চিরকুট উদ্ধার করা হয়। এতে সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার কারণে অপমানের কথা লিখে রাখেন।

মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. শহীদুল ইসলাম মিলন।

ভয়েস টিভি/টিআর

You may also like