টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার পৌর এলাকায় একই পরিবারের চারজন হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত মো. সাগর আলী র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। ১৯ জুলাই রোববার বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে মধুপুর উপজেলার ব্রাহ্মণবাড়ী গ্রাম থেকে সাগর আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাগর আলীর সাথে নিহতের পরিবারের সুদের লেনদেন ছিলো।
টাঙ্গাইল র্যাব-১২ সিপিসি ৩ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর আবু নাঈম মোহাম্মদ তালাত গণমাধ্যমকে জানান, সাগর আলী ব্রাহ্মণবাড়ি গ্রামের মগবর আলীর ছেলে। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে হত্যাকাণ্ডের সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছে, নিহত আব্দুল গনি সুদের ব্যবসা করতো। আসামি সাগর আলীর সঙ্গে পূর্বে থেকেই গনি মিয়ার সুদের লেনদেন ছিলো। আসামি বেশ কয়েকবার সুদের টাকা দিতে ব্যর্থও হয়। ঘটনার দিন মঙ্গলবার আব্দুল গনির কাছে ২০০ টাকার জন্য গেলে সাগরকে অনেক বকাঝকা করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এতে সাগর ক্ষুব্দ হয় এবং তার সহযোগীদের নিয়ে হত্যা ও টাকা পয়সা লুণ্ঠনের পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সাগর তার এক সহযোগীকে নিয়ে বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১০টার দিকে গনির বাসায় যায়। সেখানে যাওয়ার আগে সাগরের সহযোগী বাজার থেকে চেতনানাশক নিয়ে যায়। আসামি গনির পূর্বপরিচিত হওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবে বাসায় ঢোকার অনুমতি পায়। এ সময় হঠাৎ চেতনানাশক ব্যবহার করে গনিকে অচেতন করা হয়। পরিবারে সবাই ঘুমে থাকায় তাদের অচেতন করতে সহজ হয়। পরে কুড়াল ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে চারজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। র্যাবের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর বাসার মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে বাহিরে তালা মেরে পালিয়ে যায়।
আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরবর্তীতে আসামির বোনের বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়ি (মজিদ চালা) থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাকু ও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়। অপর সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে র্যাব-১২ এর অভিযান চলমান রয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে মধুপুর উপজেলা সদরের মাস্টারপাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী আব্দুল গনি (৫২), তার স্ত্রী তাজিরন বেগম (৪২), ছেলে কলেজছাত্র তাজেল (১৮) এবং মেয়ে সাদিয়ার (৭) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই গনি মিয়ার বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মধুপুর থানায় মামলা করেন।
ভয়েসটিভি/টাঙ্গাইল প্রতিনিধি/ডিএইচ