Home বিশ্ব এখনো ভেনিসে হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি হয় সোনার পাত

এখনো ভেনিসে হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি হয় সোনার পাত

by Shohag Ferdaus
পাত

হাজার বছর আগে ভেনিসের স্বর্ণকাররা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে সোনার পাত তৈরি করতেন। এখন মেশিনের যুগ চলে আসায় সেই ঐতিহ্য প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে অল্প কয়েকটি পরিবার এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।

‘মারিও ব্যার্তা বাত্তিলোরো’ নামে মেনেগাস্সো পরিবার এখনো হাতুড়ি পিটিয়ে সোনার পাত তৈরির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।

মারিনো মেনেগাস্সো বলেন, ‘এই কাজের জন্য আপনার অনেক শক্তির প্রয়োজন নেই। একটু কৌশল করতে হয়। কৌশল ভালো হলে পরিশ্রম কম হয়। এটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সোনার পাত কতখানি পাতলা করতে হবে তার ওপর নির্ভর করে ৫০ মিনিট থেকে আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত আপনাকে হাতুড়িপেটার কাজটি করতে হয়।’

২৪ ক্যারেটের খাঁটি সোনা এক হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় গলিয়ে একটি ছোট্ট সোনার বার তৈরি করা হয়, যার দাম প্রায় ছয় হাজার ইউরো হতে পারে।

মারিনো মেনেগাস্সো জানান, ১২০ গ্রাম ওজনের একটি ছোট্ট সোনার বার থেকে পুরুত্বভেদে এক থেকে ছয় হাজার সোনার পাত তৈরি করা যায়।

প্রথমে সোনার বারকে একটি রোলারের মধ্যে কয়েকবার ঢুকিয়ে পাতলা করা হয়। পরে সোনার পাতকে হাতুড়িপেটা করার আগে পার্চমেন্ট কাগজের মধ্যে আলাদা করে রাখা হয়। একেকটা প্যাকেটে ৩৩০টি পাত থাকে। প্রথমে মেশিনের নীচে এগুলো ফেলা হয়, তারপর চার ভাগ করা হয়। এবং তারপর হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়।

এক হাজার বছর আগে ভেনিসে এভাবে সোনার পাত বানানো হতো। সেই সময় মেশিন ছিল না, ছিল শুধু বিভিন্ন ধরনের হাতুড়ি।

এলেনোরা মেনেগাস্সো বলেন, এভাবে কাজ করার ঐতিহ্যটা প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে, যা কষ্টকর। এই ভালো জিনিসটা যে হারিয়ে যাচ্ছে, সেটা ঠিক হচ্ছে না।

এলিজাবেত্তা মাসন বলেন, ‘কারখানায় তৈরি সোনার পাত আর হাতে তৈরি পাতের মধ্যে অনেক পার্থক্য। কারখানায় তৈরি পাত অনেক বেশি পাতলা হয়। ফলে সহজে ভেঙে যায়। সেগুলো দিয়ে কাজ করা কঠিন। কারখানায় তৈরি পাত দিয়ে করা কাজ, হাতে তৈরি পাত দিয়ে করা কাজের মতো দেখতে সুন্দর হয় না।

ভেনিসের সেন্ট মার্কস কাম্পানিলের শীর্ষে থাকা অ্যাঞ্জেল সংস্কারে মেনেগাস্সো পরিবারের হাতে তৈরি সোনার পাত ব্যবহার করা হয়েছে। এভাবে এখনো ঐতিহ্যবাহী কাজ ভেনিসের ঔজ্জ্বল্য বাড়াচ্ছে।

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like