Home সারাদেশ হলুদ রঙে সেজেছে পল্লী প্রকৃতি

হলুদ রঙে সেজেছে পল্লী প্রকৃতি

by Newsroom
হলুদ

কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর ও নদীর চর অধ্যুষিত উপজেলাগুলোর ফসলের মাঠে-মাঠে এখন সরিষা ফুলের হলুদ রঙের সমারোহ। চারদিকে হলুদ গালিচা বিছিয়ে যেনো অপরূপ সাজে সেজেছে পল্লী প্রকৃতি।

সরিষা ফুলের মৌ-মৌ গন্ধ আর মৌমাছিদের গুঞ্জরণে মুখরিত হচ্ছে দিগন্ত বিস্তৃত প্রান্তর। নয়নাভিরাম হেমন্তশোভা ভিন্ন রকম দোলা দিয়ে যায় গ্রাম বাঙলার মানুষের মনে। এ দৃশ্য দেখতে বাড়ছে প্রকৃতি প্রেমিদের আনাগোনা। তাই কাব্য ও সাহিত্যে হেমন্ত প্রকৃতি বন্দনায় উপমা হয়ে ওঠে আসে সরিষা ফুলের নাম।

‘ফাও’ ফসল হিসেবে খ্যাত এ ফসলের বাম্পার ফলনের হাতছানিতে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, অন্তর্বতী সময়ে চাষ করে উপযুক্ত মূল্য পাওয়ায় কৃষকগণ অধিক হারে সরিষা আবাদে ঝুঁকেছে।

হলুদ

জানা গেছে, প্রতি বছর বাংলা কার্তিক মাসের শেষের দিকে বুপন করা হয় সরিষা। পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এর কর্তন হয়। বিশেষ করে হাওরাঞ্চলে বোরো ফসল কাটা শেষে নিম্নাঞ্চলের জমিগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়।

কার্তিক মাসের দিকে পানি সরে গিয়ে আরেকটি বোরো ফসলের মৌসুম শুরুর মাঝ সময়ে চাষ হয় তেল জাতীয় রবি ফসল সরিষা। এজন্যে চাষীরা এ ফসলটিকে ‘ফাও’ ফসল হিসেবে বিবেচনা করে।

সরিষা ফসল বাজারে বিক্রির আগেও এ ফসলের ফুল দিয়ে মুখরোচক বড়া ও পাতা দিয়ে মজাদার শাক রান্না করা হয়। কর্তন শেষে সরিষা গাছ শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে এসব বিক্রি করেও মেলে বাড়তি অর্থ।

হলুদ

বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয় সরিষা। কৃষকরা ধানসহ অন্যান্য ফসলে উপযুক্ত মূল্য না পাওয়ায় ব্যাপক হারে ‘ফাও’ ফসলে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

সরেজমিনে হাওর উপজেলা নিকলীর জারুই তলা ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামের বিস্তীর্ণ সরিষা ফসলের মাঠ পরিদর্শন করার সময় কথা হয় সুরুজ আলী, ইন্নছ মিয়া ও আবদুল কুদ্দুছ নামে তিন চাষির সঙ্গে।

তারা অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন, প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ধানসহ অন্যান্য খাদ্য শস্য উৎপাদন করে ন্যায্য মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তারা অল্প সময়ে ও অল্প খরচে উৎপাদিত বেশি মূল্যে বিক্রি যোগ্য ফসল সরিষা ব্যাপক হারে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

হলুদ

তারা আরও জানান, এ সময়টিতে অন্য কোনো ফসল চাষ করা হয় না বলে এ ফসলটিকে ফাও ফসল হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন তারা। আর এ ফসল বিক্রির টাকা দিয়ে সংসারের বাড়তি খরচ যোগানের পাশাপাশি বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসল চাষেও ব্যয় করে থাকেন।

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. ছাইফুল আলম জানান, এ বছর কিশোরগঞ্জ জেলায় সাত হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।

উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে নয় হাজার ৮১৫ মেট্রিক টন। তবে বাম্পার ফলনের হাতছানি থাকায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন এ কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন : মধু-মোমে পড়েনি করোনার প্রভাব

ভয়েস টিভি/এমএইচ

You may also like