পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) মহান বিজয় দিবসে স্বাধীনতা স্তম্ভে ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করে বেলা ১১টার দিকে শিক্ষকদের দুগ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও শ্রদ্ধাঞ্জলির ফুল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে সংবাদ সংগ্রহে গণমাধ্যম কর্মীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা।
পাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আওয়াল কবির জয় বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সকালে স্বাধীনতা চত্বরে পুষ্পস্তবক দেয়ার জন্য উপস্থিত হই। অনুষ্ঠানে ভিসি স্যার না থাকায় প্রশাসনের অবহেলায় পুরো অনুষ্ঠানই ছিল বিশৃঙ্খল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে নিজের অনুসারীদের নিয়ে ফুল দিতে আসেন সমিতির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. ফজলুল হক।
এ সময় সাধারণ শিক্ষকরা পুষ্পস্তবক অর্পণে অংশ নিতে গেলে তিনি বাধা দেন। এতে কথা-কাটাকাটি ও তাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ সময় ড. ফজলুল হক কাউকেই ফুল দিতে না দিয়ে নিজেই পুষ্পস্তবক ছিঁড়ে ফেলে তা পদদলিত করে পিষে ফেলেন। এতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল শিক্ষকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।
পাবিপ্রবির কয়েকজন শিক্ষক বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে, তাই বলে শহীদদের সম্মানে আনা ফুল ছিঁড়ে ফেলা এবং তা পদদলিত করা ন্যক্কারজনক। স্বাধীনতার পক্ষের কোনো মানুষ এ ধরনের কাজ করতে পারেন না।
ব্যবসায় অনুষদ বিভাগের শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, পাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ৬ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। পরে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। সাধারণ সভা না ডেকেই বিলুপ্ত শিক্ষক সমিতি কার্যক্রম চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে গেলে সাধারণ শিক্ষকেরা আপত্তি জানান। উপাচার্য উপস্থিত থাকায় সেদিন শিক্ষকদের দু গ্রুপ মুখোমুখি হলেও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু আজ বিজয় দিবসে উপাচার্যর অনুপস্থিতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ অনুষ্ঠানে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ওমর ফারুক ও সম্পাদক ড. ফজলুল হক ফুল দিতে গেলে সাধারণ শিক্ষকেরা বাধা দেন।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. ফজলুল হক পুষ্পস্তবক ভেঙে ফেলেন। এ সময় শিক্ষকদের দু গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে যায়।
পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রাক্কালে শহীদদের এমন অবমাননা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিজয় দিবসের দিনে শিক্ষকেদের এমন কাণ্ড লজ্জার।
এদিকে সংবাদ সংগ্রহে গণমাধ্যমকর্মীরা পাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে গেলেও নিরাপত্তাকর্মীরা প্রধান ফটকেই তাদের আটকে দেন।
শিক্ষক সমিতির সম্পাদক ড. ফজলুল হকের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
পাবিপ্রবি প্রক্টর ড. প্রীতম কুমার দাস বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝির কারণে হাতাহাতি হয়েছে, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি বলেন, ভিসি স্যার জরুরি কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি আসলে সিসি টিভি ফুটেজ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
আরও পড়ুন: ইবি কর্মকর্তাদের মধ্যে হাতাহাতি, পদদলিত শ্রদ্ধাঞ্জলি
ভয়েস টিভি/এসএফ