Home সারাদেশ হিলি মুক্ত দিবস আজ

হিলি মুক্ত দিবস আজ

by Newsroom
হিলি মুক্ত

আজ ১১ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের„ এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে প্রচন্ড যুদ্ধের পর ৭ নং সেক্টরের আওতায় দিনাজপুরের হিলি শত্রæমুক্ত হয়। এ সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ মিত্রবাহিনীর ৩৫৭ জন শাহাদৎবরণ করেন।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয় সুত্রে জানাগেছে, ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা ও পাশ^বর্তী জয়পুরহাট জেলার (তৎকালীন বগুড়া জেলা) পাঁচবিবি উপজেলা থেকে পাকবাহিনীরা গুলি বর্ষণ ও অগ্নি সংযোগ করতে করতে হিলিতে এসে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলে।

এরপর বিরামহীনভাবে ৩ দিন হিলিতে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ সময় ৭নং সেক্টরের ক্যাপ্টেন আনোয়ার হোসেনের দলের দু‘জন সদস্য শহীদ হন এবং ক্যাপ্টেন আনোয়ার হোসেন পাক বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে টিকে থাকতে না পেরে দলবলসহ হিলি সীমান্ত পথ দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটের তিওড় নামক স্থানে অবস্থান নেন। এবং সেখানে প্রথম মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের বালুরঘাট ট্রানজিট ক্যাম্পে তালিকাভূক্ত করে পতিরামে প্রশিক্ষন গ্রহনের জন্য পাঠানো হয়। ক্যাপ্টেন আনোয়ার ও তাঁর দলের কয়েকজন সদস্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেন।

পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের বালুরঘাটের কুমারপাড়া ক্যাম্পে আওয়ামীলীগের প্রয়াত সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল ও সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাঈদের নেতৃত্বে সশ^স্ত্র প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সু-সংগঠিত করা হয়।

আরও পড়ুন- হিলিতে দিনদিন কমছে পেঁয়াজের দাম

এরপর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা সীমান্ত পেরিয়ে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বিভিন্নভাবে গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

পাকবাহিনীরা হিলির অদুরে ছাতনী গ্রামে শক্ত ঘাটি স্থাপন করে আশ পাশে ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে তারা ভারী অস্ত্র-সস্ত্র মজুদ করে মুহাড়াপাড়ায় বেশ কয়েকটি গর্ত খনন করে ট্র্যাংক নিয়ে অবস্থান নেয় এবং খন্ড খন্ড যুদ্ধে লিপ্ত হয়।

মুহাড়াপাড়া এলাকায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর আত্মত্যাগের প্রতি জাতির শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরুপ মুহাড়াপাড়া বিজিবি ক্যাম্প সংলনগ্ন স্মৃতিস্তম্ভ ‘সম্মুখ সমর’ দীর্ঘ ৪২ বছর পর নির্মাণ করা
৬ ডিসেম্বর ভারত সরকার বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে সমর্থন দেয়। ফলে হিলিতে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর সাথে পাক হানাদারদের মধ্যে প্রচÐ সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হলে ভারত সীমাস্ত ঘেঁষা মুহাড়াপাড়া গ্রামে পাকবাহিনী কয়েকটি ব্যাংকার করে অবস্থান নেয়।

মুক্তিযোদ্ধা এবং মিত্রবাহিনীরাও সু-সংঘঠিত হয়ে ১০ ডিসেম্বর সেখানে আকাশ পথে ও স্থলপথে একযোগে হামলা চালায়। সেখানে প্রচন্ড যুদ্ধের পর পাকবাহিনী পরাস্ত হয়েছে ভেবে ১১ ডিসেম্বর ভোরে এইপথ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী বিজয় উল্লাস করতে করতে ভারতে ফিরে যাচ্ছিল।

এ সময় পাকবাহিনী তাদের উপর নির্বিচারে হামলা চালালে মুক্তিযোদ্ধাসহ মিত্রবাহিনীর ৩৫৭ জন শাহাদতবরণ করেন। আহত হয়েছিলেন আরো ১৪শ। দু‘দিনের তোড়ের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় পাক হানাদার বাহিনী। তাদের সাথে গা ঢাকা দিলো রাজাকার আলবদর আলসামস।

আর আজকের এই দিনে আনন্দ উল্লাসে লাল সবুজের পাতাকা উড়িয়ে দেয় স্থানীয়রা।

ভয়েস টিভি/ডিএইচ

You may also like