কারাগারে নয়, বই হাতে ১০ শর্তে ৩৫টি মামলায় ৪৯ জন শিশু অভিযুক্তকে সংশোধনের জন্যে প্রবেশনে বাবা-মায়ের কাছে থাকার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ২০ জানুয়ারি বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এবং শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. নান্টু রায় জানান, ৩২৩ ধারায় সুনামগঞ্জে ৩৫টি মামলায় ৪৯ জন শিশুকে মামলায় জড়ানো হয়। ক্ষুদ্র একটি অভিযোগে এসব শিশুদের প্রায়ই আদালতে হাজিরা দিতে হয়। শিশুদের ভবিষ্যত অনিশ্চিয়তার মধ্যে নিপতিত হওয়াসহ তাদের শিক্ষাজীবন ব্যহত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে শিশুদের এসব অসুবিধা থেকে মুক্তি দিতে ও কারাগারে না পাঠিয়ে সংশোধনের জন্যে ১০ শর্তে বাবা-মায়ের জিম্মায় ফেরত পাঠায় আদালত।
শর্তগুলো হল, ‘একশ মনীষীর জীবনী’ গ্রন্থটি পাঠ করা, বাবা-মাসহ গুরুজনদের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা, বাবা-মায়ের সেবা করা এবং কাজে-কর্মে সাহায্য করা, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা, প্রত্যেককে কমপক্ষে ২০টি করে গাছ লাগানো এবং পরিচর্যা করা, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা, মাদক থেকে দূরে থাকা, ভবিষ্যতে কোনো অপরাধের সঙ্গে নিজেকে না জড়ানো এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
এছাড়া ৩৫ মামলায় ৪৯ শিশুদের যে শর্তে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে পরিবারে ফেরৎ পাঠানো হয়েছে সেগুলো প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তা প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রতি তিন মাস অন্তর অবহিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
সুনামগঞ্জ জেলার প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছেন সেটি শিশুদের ভবিষ্যতে বেড়ে উঠতে কাজে দিবে। এতে করে শিশুরা অপরাধ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবে। আদালত তাদের ১০টি শর্ত দিয়েছেন এবং আমি তাদের প্রতি নজর রাখবো।