Home শিক্ষাঙ্গন ৪৩ মাসেও নির্মাণ শেষ হয়নি কুবির ‘শেখ হাসিনা হল’

৪৩ মাসেও নির্মাণ শেষ হয়নি কুবির ‘শেখ হাসিনা হল’

by Shohag Ferdaus
শেখ হাসিনা হল

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ের আড়াইগুণ পার হলেও এখনো শেষ হয়নি। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলাকে দুষছেন শিক্ষার্থীরা। ১৮ মাস মেয়াদের এ প্রকল্পটি ৪৩ মাসেও শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। কুবির ৯০ শতাংশ ছাত্রীই অনাবাসিক। সাড়ে তিন বছর আগে হল নির্মাণ কাজ শুরু হলে আবাসিকতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে ছাত্রীরা। কিন্তু কম জনবল নিয়োগ করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ শেষ করতে পারছে না। এতে ছাত্রীদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের মার্চে এ হলটি নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। তখন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে পেছনে ফেলে কাজ পায় আবদুর রাজ্জাক জেবিসিএ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পটি শেষ করতে তাদের ১৮ মাস সময় বেধে দেয়া হয়। কিন্তু ৪৩ মাস অতিবাহিত হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের তিন তলার কাজ আংশিক সম্পন্ন হলেও সেটি অপূর্ণাঙ্গ। যে পরিমাণ শ্রমিক দরকার তার বিপরীতে হাতেগোনা কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে চলছে প্রকল্পটির কাজ।

শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রশাসনের সুষ্ঠু তদারকির অভাবে এবং অদক্ষ জনবল আর স্বল্প পরিমাণে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কারণে প্রকল্পের অগ্রগতি হচ্ছে না। কিন্তু এই অনিয়মের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দফতর কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। বরং বিভিন্ন মেয়াদে কয়েক ধাপ সময় বৃদ্ধি করেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি দেখাতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এতে ছাত্রীদের আবাসন সমস্যা থেকে মুক্তিও মিলছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিমা শশী বলেন, মেয়েদের জন্য হল মাত্র একটি। ফলে ৯০ ভাগ ছাত্রীই আবাসন সুবিধা বঞ্চিত। নতুন আরেকটি হলের কাজ শুরু হওয়ার পর ভেবেছিলাম এবার হয়তো আমাদের আবাসন সংকট কিছুটা হলেও কমবে। কিন্তু প্রশাসনের উদাসিনতার কারণে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ হওয়ার নাম নেই।

তিনি আরও বলেন, এদিকে একমাত্র ছাত্রী হলটির প্রতি রুমে ৬ থেকে ১০ জন করে থাকতে হয়। এভাবে পড়ালেখার পরিবেশ থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছি পড়ালেখা করতে, আর সেজন্য সুন্দর একটি পরিবেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। নতুন হল হলে এসব সমস্যা খুব সহজে সমাধান হত। কিন্তু আফসোস আমাদের প্রশাসনের এ ব্যাপারে ভ্রুক্ষেপ নেই।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কাজ তদারকি করছেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বিষয়গুলো স্বীকার করে বলেন, আমরা নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারিনি। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, প্রকল্পের চারপাশে সীমানা প্রাচীর ছিল না, যা বাস্তবায়ন হতে সময় লাগছে। এছাড়াও জটিল নকশা এবং করোনার কারণে কাজের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে আগামী জানুয়ারির মধ্যে আমরা এ প্রকল্প প্রশাসনকে বুঝিয়ে দিতে পারব।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এর আগেও তিনি দুই-তিন মাসের ভেতর কাজ বুঝিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. আবু তাহের জানান, শেখ হাসিনা হলের কাজ নিয়ে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিভিন্ন মেয়াদে সময় বৃদ্ধি করলেও কাজের যথাযথ অগ্রগতি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে আমরা প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানাও করেছি। তবে সর্বোপরি এখন আমাদের লক্ষ্য হলো যে কোনো উপায়ে কাজ বুঝে নেয়া। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।

আরও পড়ুন: সুতোয় ঝুলছে ট্রাম্প-বাইডেনের ভাগ্য!

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like