Home বিশ্ব অপরূপ সুন্দর মালদ্বীপে কি করছে বাংলাদেশিরা

অপরূপ সুন্দর মালদ্বীপে কি করছে বাংলাদেশিরা

by Amir Shohel

বিশ্বের অন্যতম সুন্দর দেশ ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র-মালদ্বীপ। শান্ত ও মনোরম পরিবেশ আর চোখ জুড়ানো সমুদ্র সৈকত মালদ্বীপের প্রধান আকর্ষণ। যেখানে স্বচ্ছ নীল পানি আর সাদা বালির খেলা। শ্রীলঙ্কা থেকে প্রায় ৪০০ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে ১১৯২টি ছোট দ্বীপ নিয়ে মালদ্বীপ। এর মধ্যে মাত্র ২০০ দ্বীপে মানুষ বাস করে। মালদ্বীপ বিশ্বের সবচে নিচু দেশ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা মাত্র এক দশমিক পাঁচ মিটার। বিষুবরেখার কাছে হওয়ায় এখানে ঋতু আছে মাত্র একটি। আর সারাবছরের গড় তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রায় আড়াই হাজার বছর আগেও মালদ্বীপের অস্তিত্ব ছিল। এমটাই জানিয়েছেন প্রত্নতত্ববিদরা। আর যিশুখ্রিষ্টে জন্মের প্রায় ৩০০ বছর মালদ্বীপে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে জন্য ধর্মজাযক পাঠিযে ছিলেন উপমহাদেশের অন্যতম সেরা শাসক মহামতি অশোক। আর ১২০০ খ্রিস্টাব্দে মরোক্কো থেকে আবুল বারাকাত নামে এক ধর্ম প্রচারক মালদ্বীপে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন।

১১৮৩ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বখ্যাত পরিব্রাজক ইবনে বতুতাও মালদ্বীপ যান। সে সময়কার মালদ্বীপবাসীর কথাও লেখা আছে তার বইয়ে। এরপর বিভিন্ন সময়ে পর্তুগিজ ও ব্রিটিশরা পর্যটক হিসেবে, বাণিজ্য কুঠি ও সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছিলো ছোট্ট এই দ্বীপে। অবশেষে ১৯৬৫ সালের ২৬ জুলাই মালদ্বীপ ব্রিটিশদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ। আর ১৯৬৮ সালে “সালাতানাতে মালদ্বীপ” থেকে “রিপাবলিক মালদ্বীপে” পরিণত হয়।

তবে সামুদ্রিক মাছই দেশটির অর্থনীতির মূলভিত্তি। আর মালদ্বীপ বিখ্যাত টুনা মাছের জন্য। বর্তমানে সবচেয়ে বড় শিল্প পর্যটন। বৈদেশিক আয়ের ৬০ শতাংশই আসে এ শিল্প থেকে।

এশিয়ার সবচেয়ে ছোট এই দেশটিকে সৃষ্টিকর্তা যেন সাজিয়েছেন নিজ হাতে । তাইতো প্রতি বছর বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে লাখ লাখ পর্যটক মালদ্বীপ ভ্রমণে আসে। অনেকের কাছেই হানিমুনের জন্য সেরা দেশ মালদ্বীপ। আর সহজেই এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে ঘুরে বেড়ানো যায়।

একমাত্র মালদ্বীপেই বিশাল সাবমেরিনে সমুদ্রের তলদেশে ঘুরে বেড়ানো যায়। এসব সাবমেরিন প্রায় ১২০ ফুট পর্যন্ত সমুদ্রের তলদেশে যায়। আর গভীর সমুদ্রের সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হয় পর্যটকরা। মালদ্বীপে রয়েছে সমুদ্রের ওপর বিশেষভাবে নির্মিত রিসোর্ট ও কটেজ।। যেখান বসে সমুদ্রের রঙবেরঙের মাছ দেখা যায়, শোনা যায় সামুদ্রিক পাখির ডাক।

মালদ্বীপের আকেটি আকর্ষণ সমুদ্রের ৬ মিটার গভীরে স্বচ্ছ গ্লাস দিয়ে তৈরি রেস্টুরেন্ট। এ রেস্টুরেন্টে সুস্বাদু খাবার খাওয়ার পাশাপাশি স্বচ্ছ কাঁচ দিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। আর ভাদহু দ্বীপে সূর্যাস্ত যাওয়ার পর ঢেউয়ের তালে জ্বলে ওঠে বালুময় সৈকত। সমুদ্রের পানি থেকেও বিচ্ছুরিত হয় অদ্ভুত আলো। ফাইটোপ্লাংকটন নামে এক ধরনের অতি ক্ষুদ্র প্রাণী এ আলো তৈরি করে।

এছাড়া “হলুমালে” দ্বীপ মালদ্বীপের আরেকটি চোখ জুড়ানো দ্বীপ। এ দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিমোহিত করে যেকোনো পর্যটককে। আর স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্যেও সেরা এই দ্বীপ।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো মালদ্বীপের জনসংখ্যা প্রায় চার লাখ হলেও বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছে এক লাখের কাছাকাছি। তাদের অধিকাংশই হোটেল রেস্টুরেন্টে কাজ করে। সব খরচ করেও তারা প্রতি মাসে দেশে দুই থেকে আট’শ ডলার পর্যন্ত পাঠায়।

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like