দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এলে প্রতিঘাত করার মতো সক্ষমতা অর্জনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই,’ কিন্তু কেউ যদি আমাদের সার্বভৌমত্বে আঘাত করতে আসে, প্রতিঘাত করবার মতো সক্ষমতা যেন আমরা অর্জন করতে পারি-সেভাবেই আমাদের প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি থাকতে হবে। এ বিষয়টি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সব সময় মনে রাখতে হবে।’
১৩ ডিসেম্বর রোববার সকালে মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি)-২০২০ এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স (এএফডব্লিউসি )-২০২০ এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আমাদের দেশে তাদের প্রায় ১০ লাখের ওপরে নাগরিক আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে কখনো সংঘাতে যাইনি এবং আলোচনার মাধ্যমে এটা সমাধানের চেষ্টা করছি। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও সকলকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি- এই যে বিশাল একটা বোঝা আমাদের ওপর রয়েছে- এটার যেন তারা দ্রুত সমাধান করেন।’
বঙ্গবন্ধুর করে যাওয়া দেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’-এর পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেছে। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের দেশের উন্নতি করতে হবে। তার জন্য বিনিয়োগ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে যেখানে এবং যাদের কাছ থেকে যতটুকু সহযোগিতা পাওয়া যায়, প্রযুক্তি জ্ঞান পাওয়া যায়, সেটুকু নিয়েই আমরা আমাদের দেশকে গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই কথাটা মনে রাখতে হবে, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আমরা রাখবো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের দেশের নিরাপত্তা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত থাকবে এবং আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি এবং সে কারণে সারা বিশ্বে আজকে আমরা মর্যাদা পেয়েছি।’
তিনি বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা। এর সুফল বাংলার প্রতিটি মানুষের ঘরে আমরা পৌঁছে দিতে চাই।
ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
এ বছর ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩১ জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চার কমোডর এবং একজন ক্যাপ্টেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পাঁচজন এয়ার কমোডর রয়েছেন। সশস্ত্র বাহিনী অফিসারদের পাশাপাশি দুজন অতিরিক্ত সচিব, ১১ জন যুগ্ম সচিব এবং সিভিল সার্ভিসের অন্যান্য ক্যাডার, বিদেশি পরিষেবা থেকে একজন মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ পুলিশের দুজন উপ-মহাপরিদর্শক এতে অংশ নিয়েছিলেন। ১২টি বন্ধু দেশের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল-কর্নেল এবং সমমানের পদমর্যাদার ২৫ জন সদস্যও অংশগ্রহণ করেন।
এ বছর আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সে তিনজন কর্নেল এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৩ জন লেফটেন্যান্ট কর্নেল, দুজন ক্যাপ্টেন এবং ছয়জন কমান্ডার বাংলাদেশ নৌবাহিনী থেকে এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনী থেকে সাত গ্রুপ ক্যাপ্টেন এবং একজন উইং কমান্ডার অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ছয়দফা বঙ্গবন্ধুর নিজস্ব প্রচেষ্টা: প্রধানমন্ত্রী
ভয়েস টিভি/এসএফ