Home অপরাধ এএসপি আনিসুল করিম হত্যায় মামলা, আটক ১০

এএসপি আনিসুল করিম হত্যায় মামলা, আটক ১০

by Newsroom
আনিসুল

রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম ‘হত্যার’ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ৯ নভেম্বর মঙ্গলবার আনিসুলের বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় মামলাটি করেন; যার নম্বর ৯।

আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘এ বিষয়ে দুপুরে শ্যামলীতে উপপুলিশ কমিশনারের (তেজগাঁও বিভাগ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।’

এই ঘটনায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার একটি ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ, যেখানে দেখা গেছে সাত জন মিলে এএসপি আনিসুল করিমকে মারধর করছে।

পুলিশ জানায়, ‘ভর্তি করানোর কয়েক মিনিট পরই তাকে অচেতন অবস্থায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর তাকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।’

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহিদুজ্জামান জানিয়েছেন, ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মৃত আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশের (বিএমপি) ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক।

হাসপাতাল থেকে পুলিশ যে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে উদ্ধার করেছে, সেটিতে দেখাগেছে, আনিসুল করিমকে সাত জন ব্যক্তি ধরে টেনে হেচড়ে একটি কক্ষে ঢুকাচ্ছে। এরপর তাকে ফেলে তিন জন তার পিঠের উপরে, দুজন পায়ের ওপরে এবং দুই জন হাত ধরে বেঁধে ফেলে। দুই জন কুনুই দিয়ে তার পিঠ ও ঘাড়ে আঘাত করছে। মারধরের কয়েক সেকেন্ড পর অচেতন হয়ে পরে আনিসুল। তারপর তার মুখে পানি ছেটানো হয়, এই সময় মেঝেতে পানি দিয়ে কিছু একটা মুছতেও দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পর অ্যাপ্রন পরা দুই জন নারী বুকে পাঞ্চ করতে দেখা যায়।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ৩১তম বিসিএসে পুলিশের মধ্যে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় ছিলেন এএসপি আনিসুল করিম। প্রথম জন ফাউন্ডেশন কোর্স না করায় তাকেই ব্যাচের প্রথম হিসেবে ধরা হতো। কিন্তু তার ব্যাচসহ ৩৩তম ব্যাচের অনেকেই পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হলেও অজানা কারণে মেধাবী এই পুলিশ কর্মকর্তা পদোন্নতি পাননি। এসব কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন তিনি। এই জন্য তাকে মানসিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

পরিবারের সঙ্গে আনিসুল করিমওই কর্মকর্তা আরও জানান, নিহত আনিসুল করিম জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণ রসায়ন বিভাগ থেকে স্নাতোকত্তর সম্পন্ন করেছিলেন। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের আগে তিনি নেত্রকোনা জেলা, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‌্যাব ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুন- হাসপাতালে ‘৭ কর্মচারীর মারধরে’ সহকারী পুলিশ সুপারের মৃত্যু

এদিকে এএসপি আনিসুল করিমের মৃত্যুতে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন শোক প্রকাশ করে বলেছে, আনিসুল করিমের মতো একজন মেধাবী কর্মকর্তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ভীষণ শোকাহত ও মর্মাহত।

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডিএমপি কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

ভয়েস টিভি/ডিএইচ

You may also like