Home বিশ্ব এবার সাধারণ মানুষকে করোনার টিকা দেবে রাশিয়া

এবার সাধারণ মানুষকে করোনার টিকা দেবে রাশিয়া

by Amir Shohel

অবশেষে করোনা মহামারি থেকে সাধারন মানুষকে বাঁচাতে সুখবর নিয়ে এলো রাশিয়া। রুশ নাগরিকদের জন্য করোনার টিকা উন্মুক্ত করেছে তারা। রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গামেলিয়া ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টারে তৈরি স্পুটনিক-ভি নামের টিকাটি শিগগির সারাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর আগে ১১ আগস্ট রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিশ্বে প্রথম এই টিকার অনুমোদন দেয়।

বিশ্বজুড়ে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে এ বছরের শুরু থেকেই নিরাপদ ও কার্যকর টিকা আবিস্কারে দিনরাত ঘাম ঝরাচ্ছেন কয়েক হাজার চিকিৎসা বিজ্ঞানী। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে করোনার টিকা আবিস্কারে ১৭৬টি স্থানে কাজ চলছে। এরমধ্যে মানবদেহে পরীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে আছে ৩৪টি টিকা।

এরইমাঝে গত আগস্টে স্পুটনিক-ভি নামের একটি টিকার অনুমোদন দেয় রুশ সরকার। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম না মেনে এ টিকা অনুমোদন দেয়ায় বিভিন্ন পশ্চিমা গণমাধ্যমে এর কার্যকারিতা নিয়ে নানা বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু রুশ বিজ্ঞানীদের দাবি, এই টিকার প্রাথমিক পরীক্ষাতেই প্রতিরোধী ক্ষমতার প্রমাণ পেয়েছেন তারা।

অবশেষে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানায়, করোনা প্রতিরোধে স্পুটনিক-ভির প্রথম ব্যাচের টিকাটি প্রয়োজনীয় সব গুণগত পরীক্ষায় পাশ করেছে। অবশেষে দেশে রোজদ্রা-ভনাদজোর পরীক্ষাগারে পরীক্ষা শেষে টিকাটি রুশ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে। এদিকে, মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন বলেছেন, শিগগির রাজধানীর অধিকাংশ নাগরিককেই করোনা টিকা দেয়া হবে।

এর আগে রাশিয়ার গবেষকরা মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এ তাদের গবেষণার বিষয়ে এক নিবন্ধও প্রকাশ করেন। তাদের দাবি, করোনা টিকার গবেষণায় অংশ নেয়া সবার শরীরে টিকা দেয়ার পর অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। আর এই টিকার কোনো বড়ধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নাই।

ল্যানসেটের ওই প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, রুশ কৃত্রিম উপগ্রহের নামে তৈরি স্পুটনিক-ভি টিকাটি নিয়ে দুটি পরীক্ষা চালানো হয়েছে গেল জুন ও জুলাই মাসে। প্রতিটি পরীক্ষায় দুই ডোজ করে টিকা ও বুস্টার দেয়া হয় ৩৮ জন স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে। প্রথম টিকা দেয়ার তিন সপ্তা পর কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দেয়া হয় বুস্টার। স্বেচ্ছাসেবকদের ৪২ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হলেও তিন সপ্তার মধ্যে সবার শরীরেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।

রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাস্কো জানান, আগামী নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে রুশ নাগরিকদের টিকা দেয়া শুরু হবে। তবে প্রথমে টিকা দেয়া হবে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের।

এদিকে করোনার টিকা আবিস্কারের লড়াইয়ে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের উদ্ভাবিত টিকাটি। মানবদেহে এই টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চলছে। তবে এগিয়ে আছে, চীনের সিনোভ্যাক, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ও ফাইজার এবং জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত সম্ভাব্য টিকাগুলো। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই তালিকায় নাম নেই রাশিয়ার কোনো টিকার।

এরইমধ্যে বিশ্বের প্রায় ৮ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা মহামারি। আর এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে প্রায় পৌনে তিন কোটি। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে এক কোটি ৯৩ লাখের বেশি রোগী।

অনুবাদক : ফেরদৌস মামুন, সাংবাদিক

You may also like