কুড়িগ্রাম উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নে মুন্সিবাড়ির অবস্থান। উপজেলা শহর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে প্রায় ৩৯ একর জায়গার উপর মুন্সিবাড়ির অট্টালিকা ।
আঠারো শতকে বিনোদী লালের পালক পুত্র শ্রী ব্রজেন্দ্র লাল মুন্সির তত্ত্বাবধানে চমৎকার স্থাপত্যের এই মুন্সিবাড়ি নির্মিত হয়। মূল ভবনে আছে- শয়ন কক্ষ, ডাইনিং হল, রান্নাঘর, অঙ্কন কক্ষ, বিশ্রাম ঘর এবং অতিথিশালা।
মূল বাড়ির পেছনের দিকে শিবমন্দির, উন্মুক্ত দোল মঞ্চ, তুলসি বেদী, নাট মন্দির, দূর্গা মন্দির ও কূপসহ স্নানাগার রয়েছে। এছাড়া মূল ফটকের পাশে আছে কাঁঠালি চাঁপা ফুলের গাছ এবং শান বাঁধানো পুকুর ঘাট।
জানা যায়, কাশিম বাজারের ৭ম জমিদার কৃষ্ণনাথ নন্দীর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী মহারানী স্বর্নময়ী দেবীর অধীনে হিসাব রক্ষকের কাজ করতো বিনোদী লাল নামের এক মুনসেফ বা মুন্সি।
কথিত আছে, একদিন বিনোদী লাল মুন্সি শিকার করতে গিয়ে একটি ব্যাঙের সাপ ধরে খাওয়ার দৃশ্য দেখতে পান। আগেকার দিনে মানুষেরা বিশ্বাস করতেন যে স্থানে ব্যাঙ সাপকে ধরে খায় সেই স্থানে বাড়ি করলে অনেক ধন সম্পত্তির মালিক হওয়া যায়।
তাই বিনোদী লাল মহারানী স্বর্নময়ীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এই স্থানে একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। আর এটি উলিপুরে স্বর্নময়ীর পুকুর পাড় নামে পরিচিত। মানুষরা এখানে ঘুরতে আসেন ।
অবহেলা-অযত্নে এবং স্বার্থপরতায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে উলিপুর-কুড়িগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষী বিখ্যাত মুন্সী বাড়ি। এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছে, অট্রালিকাটিকে ঐতিহাসিক স্থান হিসাবে সংরক্ষণ করে দর্শনীয় স্থান গড়ে তোলার। যুগযুগ বেঁচে থাকুক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী জমিদার আমলের ধরণীবাড়ীর স্মৃতি মুন্সীবাড়ি এমনটাই চাওয়া স্থানীয়দের।
ভয়েসটিভি/এএস