Home জাতীয় জঙ্গিদের ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন মামুনুল: পুলিশ

জঙ্গিদের ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন মামুনুল: পুলিশ

by Shohag Ferdaus

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জড়িত জঙ্গিদের ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন দাবি করে পুলিশ বলছে, তাদের একজনের সঙ্গে প্রায় দেড় মাস পাকিস্তানেও ছিলেন তিনি।

২৫ এপ্রিল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার হারুন অর রশিদ।

নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, “মামুনুল হকের জব্দ করা মোবাইল ফোন থেকে বাবরি মসজিদের নামে কাতার, দুবাই ও পাকিস্তান থেকে টাকা আনার তথ্য-প্রমাণও মিলেছে।”

সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদকালে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক দলটির কেন্দ্রীয় এই নেতার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের তথ্যও জানতে পেরেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা বলে উল্লেখ করেন উপ কমিশনার হারুন।

পাকিস্তানের একটি সংগঠনের আদলে দেশে হেফাজতে ইসলাম পরিচালনা করছিল মামুনুল জানিয়ে তিনি বলেন, মামুনুল রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী ছিলেন। জামায়াতের সহায়তায় ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা ভাবনা ছিল তার।

মার্চে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের উৎসবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতায় হেফাজতের বিক্ষোভ কর্মসূচী ও হরতালকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ও তাণ্ডবের ঘটনায় প্রাণহানিও হয়। এরপর থেকে আবার আলোচনায় আসে দলটি।

এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার একটি রিসোর্টে ৩ এপ্রিল এক নারীসহ আটকের পর একাধিক বিয়ের ঘটনায় আলোচনায় আসেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল।

এরপর গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন মোহাম্মদপুর থানার নাশকতার এক মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিন রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে ‘জঙ্গিবাদের’ সঙ্গে মামুনুলের সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে এসেছে উল্লেখ করে উপ কমিশনার হারুন জানান, তার ভগ্নিপতি মাওলানা মুফতি নেয়ামত উদ্দিন, মাওলানা তাজউদ্দীন ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে উপ পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ।সংবাদ সম্মেলনে উপ পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, একবার নেয়ামত উদ্দিন গ্রেপ্তারও হয়েছিল। তাকে পরে ছাড়িয়ে আনে। এই নেয়ামতের সঙ্গে ২০০৫ সালে পাকিস্তানে গিয়ে ৪৫ দিন ছিল। সেখানে বিভিন্ন জঙ্গি-রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে তখন যোগাযোগ করে।

পুলিশ কর্মকর্তা হারুন আরও বলেন, দেশের বাইরে থেকে মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমেও লক্ষ কোটি টাকা এনে সে বিভিন্ন মসজিদে-মাদ্রাসায় জঙ্গি উগ্রবাদী কাজে ব্যবহার করত।

হেফাজতে ইসলামের কয়েক নেতাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার কথা শনিবার জানিয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলমও।

তিনি বলেন, “পাকিস্তানের ‘তেহেরিক-ই-লাব্বায়িক’নামের সংগঠনের আদলে তারা হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশকে গঠন করে পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের মতো এদেশকে গড়ে তুলতে চায়। যার পেছনে জামাত-শিবির রয়েছে।”

ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, দেশের কোন মাহফিলে কে ওয়াজ করবেন, সেটাও হেফাজতে ইসলামের নেতাদের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা মাহবুব বলেন, “রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন নামের সংগঠনটি বেশ তৎপর। হেফাজতের উগ্রপন্থি নেতারা এর নেতৃত্ব দিচ্ছে। কোথাও কোন ওয়াজ মাহফিল করতে হলে তাদের মাধ্যমে আসতে আয়োজকদের বাধ্য করা হয়।”

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক ‘রাবেতাতুল ওয়ায়েজীন’ এর নেতৃত্বে ছিলেন বলে দাবি করেন ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

নরেন্দ্র মোদীর সফরকেন্দ্রিক বিক্ষোভ থেকে সহিংসতার ঘটনায় সম্প্রতি মামুনুল হকসহ হেফাজতের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ভয়েস টিভি/এসএফ

You may also like