Home জাতীয় ডিএসসিসির বেশির ভাগ গাড়ি চালকই ক্লিনার

ডিএসসিসির বেশির ভাগ গাড়ি চালকই ক্লিনার

by Mesbah Mukul

রাজধানীর গুলিস্তানে নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে চাপা দেওয়া দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার গাড়িটির চালক ছিলেন একজন ক্লিনার। তিনি কোনো দক্ষ চালক ছিলেন না। এমনকি তার কোনোরকম লাইসেন্সও ছিল না। এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গোপন রেখে ডিএসসিসির মত একটি প্রতিষ্ঠানে রাসেল খান নামে এই ক্লিনার চাকরি করছিলেন কিভাবে সেটাই এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার ২৪ নভেম্বর গাড়ির ধাক্কায় নাঈম হাসানের মৃত্যুর পর ডিএসসিসির একাধিক চালক ও পরিবহন পুলের একাধিক কর্মকর্তা ঘাতক গাড়িচালক রাসেলের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন।

ডিএসসিসির পরিবহন পুলের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এখানকার বেশিরভাগ চালকই ক্লিনার। এদের একটি অংশ মাস্টার রোলে চাকরি করেন, একটি অংশের স্থায়ী চাকরি এবং বাকী অংশ কিভাবে এখানে কাজ করেন তা জানেন না তিনি।

জানতে চাইলে মাস্টার রোলে থাকা একজন গাড়িচালক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাস্টার রোলে গাড়ি চালাচ্ছি। এরপরও কাউকে স্থায়ী করা হয়নি। অন্যদিকে যারা আউট সোর্সিংয়ে কাজ করেন তাদের ব্যাপারেও করপোরেশনের কোনো উদ্যোগ নেই। এখানে স্থায়ী গাড়িচালকের সংখ্যা অনেক কম। মাস্টার রোলে যারা আছেন তাদের অনেকেরই লাইসেন্স নেই। আর যারা ক্লিনার গাড়িচালক তাদের লাইসেন্সও নেই আবার দক্ষ চালকও না।

অভিযোগ আছে, বেশিরভাগ ক্লিনার বেতন ছাড়াই গাড়ি চালান। কারণ এরা রাতের বেলা গাড়ি থামিয়ে ট্যাংকি থেকে তেল চুরি করে বিক্রি করে । এসব তেল অল্প টাকায় সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করা হয়। তাই বেতন ছাড়াও চুরির মাধ্যমে তাদের অবৈধ আয় রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে ডিএসসিসি’র মোট যানবাহন ৫১৩টি। এর মধ্যে কয়েকটি গাড়ি অকেজো আর বাকীগুলো সচল। বিপরীতে নিবন্ধিত গাড়িচালক মাত্র ১৪৭ জন। ২০০টি গাড়ি চলে মাস্টাররোলে নিয়োগপ্রাপ্ত চালক দিয়ে। যাদের অধিকাংশই ক্লিনার। যাদের কোনো প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স কিছুই নেই। বাকি ১৫০টি গাড়ি কীভাবে চলে সেটার সঠিক তথ্য নেই ডিএসসিসির পরিবহন বিভাগের কাছে। নিবন্ধিত চালক ছাড়া ডিএসসিসির বাকি গাড়িগুলো চলে অদক্ষ ও অনিবন্ধিত চালক দিয়ে। ফলে সংস্থার গাড়িগুলো দিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে অভিযোগ আছে খোদ সংস্থাটির ভেতরেই।

পল্টন থানার অফিসার ইনচার্জ সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুর্ঘটনার পর ব্যবসায়ী, হকার ও পথচারীরা গাড়িসহ চালককে আটকে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে গাড়িসহ চালককে পল্টন থানায় নিয়ে আসে। তিনি নিজেকে চালক হিসেবে দাবি করেছেন। তবে তিনি চালক নাকি ক্লিনার সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। তার নাম রাসেল খান। সে দীর্ঘকাল ধরে সিটি করপোরেশনের গাড়ি চালাচ্ছে। এর আগে তিনি ক্লিনার ছিলেন কি না এটাও জানা যায়নি এখনো। সিটি করপোরেশন যদি তার ব্যপারে তথ্য দেয় তাহলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।

আরও পড়ুন : জামিন করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ঘুষ গ্রহণ : আদালতের গাড়িচালক

ভয়েসটিভি/এমএম

You may also like