Home জাতীয় টালমাটাল জ্বালানি বাজার, হাত গুটিয়ে বিপিসি

টালমাটাল জ্বালানি বাজার, হাত গুটিয়ে বিপিসি

by Mesbah Mukul

জ্বালানির আন্তর্জাতিক বাজার বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে। সব ধরনের জ্বালানিপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তেলের দাম রেকর্ড ভাঙছে।  বাড়ছে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দরও। এতে বাংলাদেশের মতো আমদানিনির্ভর জ্বালানি ব্যবহারকারী দেশগুলো চরম সংকটে পড়েছে। দাম বাড়ায় সরকারের ভর্তুকি বাড়ছে। অন্যদিকে বাড়ছে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না জ্বালানি আমদানিকারক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। বরং অদক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। শুধু লাভ-লোকসানের হিসাব কষে এবং সেই তথ্য ঊর্ধ্বতন মহলকে জানিয়েই দিন পার করছে সংস্থাটি। দামের ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায়ও বিপিসি পণ্য আমদানি পূর্বপরিকল্পনামতোই চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশ মজুত বৃদ্ধি, সাশ্রয়ী বাজার খোঁজার উদ্যোগ নিলেও সংকট মোকাবিলায় বিপিসি কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। অন্যদিকে এলএনজি আমদানিতে বুঝেশুনে এগোতে চাইছে পেট্রোবাংলা।

পরিস্থিতি সামলাতে দীর্ঘ মেয়াদের জন্য জ্বালানিপণ্যের মজুত ক্ষমতা বাড়ানো এবং সংকট ব্যবস্থাপনা তহবিল গঠনের ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমান আপৎকালীনের জন্য জ্বালানি তেল রেশনিং (জনপ্রতি নির্দিষ্ট বরাদ্দ) করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হবে, জ্বালানি তেলের দাম ততই বাড়বে। একই অনুপাতে বাড়বে এলএনজি ও এলপিজির দাম। সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের পর রাশিয়া বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম অবস্থানে রাশিয়া। ফলে রাশিয়ার উৎপাদন ও সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার প্রভাব পড়ছে সারাবিশ্বে।

জ্বালানি তেলের দরে আগুন : আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে ব্যারেলপ্রতি ৯০ মার্কিন ডলারে পৌঁছে যাওয়া অপরিশোধিত তেলের দাম কমতে কমতে ৭০ ডলারের নিচে নেমে এসেছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে তা বাড়তে থাকে হুহু করে। এরই মধ্যে ব্যারেলপ্রতি তা ১৩৯ ডলারে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, চলতি মাসেই তেলের ব্যারেল ২০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এর আগে ২০০৮ সালের জুলাইয়ে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রায় ১৪৭.৫০ ডলারে পৌঁছেছিল, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। বিপিসি দাবি করছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তেল বিক্রিতে দৈনিক লোকসানের পরিমাণ ৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিজেল বিক্রিতে লোকসান ৫২ কোটি টাকা। প্রতিদিন প্রতি লিটারে লোকসান ২৮ টাকার বেশি। আর অকটেনে মোট চার কোটি টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে দিনে।

বাংলাদেশে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল ব্যবহার হয়, তার ৭৩ শতাংশের বেশি ডিজেল। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ১৮ হাজার টন ডিজেল বিক্রি করছে বিপিসি। সেচ মৌসুম চলছে। ফলে ডিজেলের চাহিদা বাড়ছে। লোকসানও বাড়ছে। মাত্র মাস চারেক আগে দেশে লোকসানের যুক্তি দেখিয়ে ডিজেলের দাম এক লাফে লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বাজারে বর্তমানে ৮০ টাকা লিটারে ডিজেল বিক্রি হচ্ছে।

প্রস্তুতি নেই : বাংলাদেশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করে মধ্যপ্রাচ্যের বাজার থেকে। পরিশোধিত তেল আসে প্রধানত সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও চীন থেকে। এলএনজি ও এলপিজির উৎসও প্রায় একই। ফলে রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও তেল-গ্যাস আমদানি এখনও তেমনভাবে বাধাগ্রস্ত হয়নি। তবে রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্র বিকল্প উৎস থেকে তেল-গ্যাস আমদানির চেষ্টা করছে। ইউরোপীয় দেশগুলোও এশিয়াসহ অন্যান্য বাজারের দিকে নজর দেবে। এতে এশিয়ার বাজারের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে। ফলে সামনে জ্বালানি সরবরাহেও সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

সংশ্নিষ্টরা জানান, অস্থির বাজার পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ তেলের মজুত বাড়াচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এ সুযোগ কম। বর্তমানে বাংলাদেশের জ্বালানি তেলের মজুত ক্ষমতা ১৩ লাখ আট হাজার টন। অর্থাৎ ৩৫ থেকে ৪০ দিনের চাহিদার সমপরিমাণ মজুত থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মজুত থাকে ডিজেল; ছয় লাখ টনের মতো। অপরিশোধিত তেল সংরক্ষণের সুবিধা কম, মাত্র দুই লাখ ২৫ হাজার টন। আবার পরিশোধন ক্ষমতাও কম। বছরে ১৫ লাখ টনের বেশি পরিশোধন করার সক্ষমতা নেই বিপিসির। ফলে চাহিদার বড় অংশই পরিশোধিত তেল আমদানি করতে হয়, যার দামও বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারির শোধন ক্ষমতা বৃদ্ধির একটি প্রকল্প এক দশক ধরে ঝুলে আছে। তেল সরবরাহের সিস্টেমলস কমানোর বিষয়ে বিপিসির সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ বিশেষজ্ঞদের। ইউক্রেন-রাশিয়ার মতো আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় তেমন কর্মপরিকল্পনাও নেই সংস্থাটির। তারা শুধু দৈনিক লোকসান হিসাব করছে, আর বার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে আমদানি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

এলএনজি নিয়ে দুশ্চিন্তা : দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদার বড় অংশ পূরণ করা হচ্ছে এলএনজি আমদানির মাধ্যমে। এর মধ্যে একটি অংশ কেনা হয় কাতার ও ওমান থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে। আর কিছু কেনা হয় সরাসরি স্পট মার্কেট থেকে। তেলের দাম বাড়ায় কাতার ও ওমান থেকে কেনা এলএনজির দাম বেশি পড়ছে। এ দুটি দেশ থেকে কেনা এলএনজির গড় দাম ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ (মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) ১০ মার্কিন ডলার। বর্তমানে তা বেড়ে ১৫ ডলার হয়েছে।

বর্তমানে স্পট মার্কেটে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ৬০ ডলারে পৌঁছেছে। সর্বশেষ গত যে দুই কার্গো স্পট মার্কেট থেকে বাংলাদেশ কিনেছিল, তার দাম পড়েছে প্রতি এমএমবিটিইউ প্রায় ৩০ ডলার। চলতি মাস আরেক কার্গো এলএনজি কেনার দরপত্র দিলেও কোনো কোম্পানির সাড়া পায়নি পেট্রোবাংলা। তবে চুক্তির আওতায় কাতার থেকে তিনটি ও ওমান থেকে একটি কার্গো আসবে এ মাসে। স্পট মার্কেট থেকে তিন কার্গো এলএনজি কেনার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের। তবে দাম রেকর্ড পরিমাণ বাড়ায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান। তিনি বলেন, ‘দাম যে হারে বেড়েছে, এই মুহূর্তে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা দেশের জন্য বড় ধরনের আর্থিক লোকসান। তাই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’

এলএনজির এই ঊর্ধ্বমুখী দরের কারণে সরকারের দুশ্চিন্তা বেড়ে চলেছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এলএনজি ভর্তুকি বাবদ চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, যার মধ্যে এ পর্যন্ত এক হাজার কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি পেট্রোবাংলা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এলএনজি আমদানির জন্য ৩২ হাজার ২১৯ কোটি টাকা চেয়েছে। সংস্থাটি বলছে, আমদানি করা এলএনজির সঙ্গে দেশীয় গ্যাসের মিশ্রণের পর প্রতি ঘনফুটের খরচ পড়ে ২২ টাকা। গ্রাহকদের কাছে তা বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৯ টাকা দরে। লোকসান কমাতে সরকার গ্রহাক পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। চলতি মাসেই এ সংক্রান্ত গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এলপিজিতেও আগুন :গত মাসের মতো এ মাসেও এলপিজির দাম বেড়েছে। এক ধাক্কায় দাম বাড়ানো হয়েছে ১২.১৩ শতাংশ। ফলে গত মাসে ১২ কেজির যে সিলিন্ডারের সরকার নির্ধারিত দাম ছিল এক হাজার ২৪০ টাকা, এ মাসে সেটি হয়েছে এক হাজার ৩৯১ টাকা। এতে একটি পরিবারের জ্বালানি খরচ গড়ে বাড়বে কমপক্ষে ৩০০ টাকা (পাঁচ সদস্যের পরিবারে সাধারণত মাসে ১২ কেজির দুটি সিলিন্ডার লাগে)। একই সঙ্গে বেড়েছে পরিবহনে ব্যবহূত এলপিজি-অটোগ্যাসের দামও। যদিও সরকার নির্ধারিত দামে বাজারে এলপি গ্যাস মেলে না। আরও ৫০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দামে সিলিন্ডার কিনতে হয় ক্রেতাদের।

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক বাজারে এলপিজির মূল উপজাত প্রোপেন ও বিউটেনের দাম বাড়ছে। সৌদি সিপি (সৌদি আরামকো) অনুসারে মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম যথাক্রমে প্রতি টন ৮৯৫ ও ৯২০ ডলারে উঠেছে, যা গত মাসে ছিল ৭৭৫ ডলার।
দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৬৩ লাখ টন। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল এনে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করে বিভিন্ন পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল, কেরোসিনসহ বিভিন্ন পেট্রোলিয়াম পণ্য উৎপাদন করা হয়। বাকি চাহিদা পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির মাধ্যমে মেটানো হয়। চাহিদার ৫০ শতাংশ জিটুজি চুক্তিতে এবং অবশিষ্টাংশ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয়।

চলতি অর্থবছরে ৫৩ লাখ ৫৭ হাজার টন জ্বালানি তেল আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে বিপিসির। এর মধ্যে ডিসেম্বর পর্যন্ত আনা হয়েছে ২৬ লাখ ১০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল।

সরকারি একটি কোম্পানিসহ বর্তমানে দেশে এলপিজি আমদানি, মজুত, বিতরণের সঙ্গে সক্রিয় রয়েছে ২৯টি প্রতিষ্ঠান। বার্ষিক এলপিজি ব্যবহারের পরিমাণ ১৪ লাখ টন, যার ৯৮ শতাংশ আসে বেসরকারি খাত থেকে। ৩৮ লাখ গ্রাহকের জন্য তিন হাজার পরিবেশক ও ৩৮ হাজার খুচরা বিক্রেতা রয়েছে সারাদেশে।
দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৪৩০ কোটি ঘনফুট। দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে এখন পাওয়া যাচ্ছে ২৩৩ কোটি ঘনফুট। বঙ্গোপসাগরে থাকা দুটি ভাসমান এলএনজি প্রক্রিয়াকরণ টার্মিনালের মাধ্যমে পাওয়া যায় ৮৫ থেকে ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাস।

বিশেষজ্ঞদের মত :বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, এখন আপৎকালীন পরিস্থিতি চলছে। সারাবিশ্বই সংকটে আক্রান্ত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের ওপর নজর দিতে হবে। তেল রেশনিং করা যেতে পারে। ধীরে ধীরে মজুত ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সদস্য মকবুল ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। ইউক্রেনে যুদ্ধ হচ্ছে। আগামীতে অন্য কোথাও অন্য কোনো সংকট হবে। এ কারণে দেশে তেল-গ্যাস উৎপাদন ও অনুসন্ধান বাড়াতে হবে। সিস্টেমলস কমাতে হবে।

কর্তৃপক্ষের বক্তব্য :বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বলেন, সূচি অনুসারে তেল আমদানি চলছে। বিশ্ববাজারে যে হারে দাম বাড়ছে, তাতে প্রতিনিয়ত লোকসান বাড়ছে।

তার ভাষ্য, আগামী দুই বছরের মধ্যে মজুত সক্ষমতা বেড়ে ৬০ দিনে উন্নীত হবে। বিশেষ পরিস্থিতির জন্য বিকল্প ভাবনার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজির আমদানি বৃদ্ধির বিষয়ে একাধিক দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দাম বেশি হওয়ায় বর্তমানে স্পট মার্কেট থেকে ভেবেচিন্তে এলএনজি কেনা হচ্ছে।
বিদেশ সফরে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সূত্র : সমকাল

ভয়েসটিভি/এমএম

You may also like