Home ভিডিও সংবাদ পাখির কিচিরমিচিরে মুখর শালবন

পাখির কিচিরমিচিরে মুখর শালবন

by Amir Shohel

পাখির কলতান, সারি সারি শাল আর বেত গাছে ঘেরা লালমনিরহাটের শালবন। ৮৫ একরের এই শালবনের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিবছর এখানে ছুটে আসেন হাজারো প্রকৃতিপ্রেমী।

একশ’ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা জেলা লালমনিরহাটের ঠিক মাঝে হাতীবান্ধা উপজেলার নওদাবাস ইউনিয়নের দৈখাওয়া এলাকায় শালবনটির অবস্থান। এটি জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এ শালবনে শাল ও বেতগাছ মুগ্ধ করে প্রকৃতিপ্রেমীদের।এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি নজরকাড়ে পর্যটকদের। আরো আছে বানর, শিয়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণি। রয়েছে নানা প্রজাতির কীটপতঙ্গও।

বিস্তীর্ণ এই বনের উচু শালগাছ দূর থেকেও চোখে পড়ে। আর বনের ভেতর ঢুকলে দেখা মেলে সবুজ গাছ। পাখির কিচিরমিচির শব্দের সাথে নানা পতঙ্গের আওয়াজ। উড়ে বেড়ায় নানারঙের ফড়িং, প্রজাপতি, ভিমরুল। বুনো ফলের স্বাদও অন্য রকম। এ বনের সবগাছই পাখিদের নিরাপদ বাস। সকাল-বিকেল গাছের ডাল ও পাতার ফাঁকে ফাঁকে শুধু পাখির দেখা মেলেয়। তবে করোনার কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই সাধারন মানুষের আনাগোনা বন্ধ। তাই পাখিরা যেন নিরাপদ আবাস গড়ে তুলেছে গোটা বনে।

বিশাল এ শালবনের মাঝে একেবেকে গেছে সরু পথ। এ পথ ধরে ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতিই অন্যরকম। তবে মেঠোপথে চলতে গিয়ে সামান্য অসতর্ক হলেই বেতের কাঁটায় আটকে যেতে পারে জামা। প্রায় সারা বছরই হাজারো দর্শনার্থীর ভিড়ে মুখর থাকে শালবন।

এবনে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য রয়েছে ছাউনীসহ বসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। রয়েছে গণশৌচাগারও। তবে এ বিশাল বন দেখাশোনার জন্য রয়েছে মাত্র ২ জন বনরক্ষী।

ঢাকা থেকে আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে অথবা সড়ক পথেও বাসে যাওয়া যায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায়। সেখান থেকে অটোরিক্সা বা প্রাইভেটকার ভাড়া করেও ঘুরে আসা যায় শালবনে। তবে সন্ধ্যার পর শালবনে থাকা বা রাত কাটানো নিষিদ্ধ।

শালবনের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের পর সময় থাকলে যাওয়া যায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজে। তিস্তা নদীর পানি ব্যবহার করে বাড়তি ফসল উৎপাদনের জন্য ৯০ দশকে তৎকালিন রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ তিস্তা ব্যারাজ নির্মাণ করেন। ব্যারাজটি লালমনিরহাটের সাথে নীলফামারী জেলার যোগাযোগ স্থাপন করেছে। এর অবস্থান হাতিবান্ধা উপজেলার দেয়ানী এলাকায়। ব্যারাজের ৫২টি জলকপাটের মধ্যে ৪৪টি জলকপাট দিয়ে তিস্তা নদীর মূল স্রোতধারা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বাকী ৮টি জলকপাট দিয়ে পানি সরবরাহ করা হয় সেচ ক্যানালে।

তিস্তা নদীর পানির কলকল শব্দ উপভোগ করতে প্রায় প্রতিদিনই এখানেও ভিড় জমায় হাজারো মানুষ। স্পিডবোটেও ঘোরা যায় তিস্তা নদীতে। এক সময় আলোচিত পিকনিক স্পট ছিল এই তিস্তা ব্যারাজ। এখনো এ জেলার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ব্যারাজের জুড়ি মেলানো ভার। বর্তমানে বিভিন্নস্থানে কৃত্রিমভাবে গড়ে তোলা বিনোদন কেন্দ্রের জন্য তিস্তা ব্যারেজে পিকনিক কম হলেও দর্শনার্থী কমেনি। এখানে কোন প্রবেশমূল্য বা টিকিট ছাড়াই উপভোগ করা যায় তিস্তা নদীর অপরূপ সৌন্দর্য।

ভয়েসটিভি/এএস

You may also like