Home জাতীয় শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণে চলছে জাতীয় পিঠা উৎসব

শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণে চলছে জাতীয় পিঠা উৎসব

by Mesbah Mukul

নৃত্যের ছন্দ ও সুরের মূর্চ্ছনা শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণের মঞ্চ থেকে ভেসে আসছে। প্রাঙ্গণের স্টলে স্টলে পিঠার পসরা সাজিয়ে চলছে বিকিকিনি। বাহারি রঙের সাথে বৈচিত্র্যময় ডিজাইন ও নকশায় অনন্য হয়ে উঠেছে কনকনে হিমেল শীতের পৌষের সন্ধ্যা। দোকানে বানাচ্ছে বিক্রেতা আর কিনছে ক্রেতারা।

একই সঙ্গে আবহমান বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য পিঠাপুলির সাথে সেলফি তোলে পিঠা কেনা ও খাওয়ার দৃশ্যকে স্মৃতিময় করে রাখার চেষ্টাও লক্ষনীয় ছিল শিল্পকলা একাডেমিতে আগত পিঠাপ্রেমীদের মাঝে। নৃত্যের তালে আর গানের সুরে পিঠা কেনা ও খাওয়ায় শিল্পকলা একাডেমি জুড়ে ফুটে উঠেছে চিরচেনা বাঙালি সংস্কৃতির শ্বাশত রূপ।

এমন দৃশ্যকল্পই ছিল বুধবার শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হওয়া জাতীয় পিঠা উৎসবের উদ্বোধনীতে। এর আগে একাডেমির কফি হাউজের মুক্তমঞ্চ থেকে নানা রঙের বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দশদিনের এই পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন উদ্বোধনী আয়োজনের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এ সময় উন্মুক্ত প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থান থেকে বেলুন পৌষের সাঁঝের আকাশে বেলুন ওড়ান অনুষ্ঠানে আগতরা। জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ আয়োজনে এটি উৎসবের পঞ্চদশ আসর।

জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের আহবায়ক ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যজন আতাউর রহমান, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ, উৎসবের পৃষ্ঠপোষক সিটি গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক জাফর সিদ্দিকী, নৃত্যশিক্ষক আমানুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ আলম ও শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন শিল্পকলা একাডেমির সচিব মো. আসাদুজ্জামান।

আরও পড়ুন : শীতের আড্ডায় গরম পিঠা

উদ্বোধনকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পিঠা বাঙালির চিরায়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। শীত আর পিঠা একে অপরের পরিপূরক। বাংলার গ্রামের মা, চাচি, খালা, বোন, ভাবিদের চিরায়ত সেই ঐতিহ্য নগরজীবন থেকে হারিয়ে যাওয়ার পথে। আবহমান বাংলার এই ঐতিহ্যকে তুলে ধরার লক্ষ্যে পিঠা উৎসবকে দেশব্যাপি ছড়িয়ে দিতে হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ বিভাগীয় পর্যায়ে জাতীয় পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছিল। অদূর ভবিষ্যতে জেলা পর্যায়েও আয়োজন করা হবে এই উৎসব। সারাদেশের পিঠাশিল্পীদের অংশগ্রহণে প্রায় ৫০টি স্টল দিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের উৎসব।

চিতই পিঠা, দুধ চিতই, নকশি পিঠা, মেড়া পিঠা, মালপোয়া, নারকেলের ভাজা পুলি, হাঁড়ি পিঠা, মালাই পিঠা, মুঠি পিঠা, আন্দশা, কুলশি, কাটা পিঠা, কলা পিঠা, খেজুর পিঠা, ক্ষীর কুলি, গোকুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিফা, রসফুল পিঠা, সুন্দরী পাকান, সর ভাজা, পুলি পিঠা, পাতা পিঠা, পাটিসাপটা, পাকান পিঠা, নারকেলের সেদ্ধ পুলি, নারকেল জিলাপি, তেজপাতা পিঠা, তেলের পিঠা, তেলপোয়া পিঠা, চাঁদ পাকান পিঠা, ছিট পিঠা, পানতোয়া, জামদানি পিঠা, ঝালপোয়া পিঠা, ঝুরি পিঠা, ছাঁচ পিঠা, ছিটকা পিঠা, বিবিখানা, ভাঁপা পিঠা, ঝাল পিঠা, চুটকি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, ফুল পিঠা, বিবিয়ানা পিঠা, সেমাই পিঠা, নারকেল পিঠা, দুধরাজ, ফুলঝুরি পিঠাসহ প্রায় শতাধিক রকমের পিঠা দিয়ে সাজানো হয়েছে উৎসবের স্টলগুলো।

উৎসবের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে পিঠা খাওয়া ও বিকিকিনির পাশাপাশি প্রতিদিন বিকাল তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে নাচ, গান, আবৃত্তি, অ্যাক্রোবেটিকসহ ও পথনাটকসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা। ১৪ জানুয়ারি শুক্রবার শেষ হবে দশদিনের এই পিঠা উৎসব। সমাপনী আসরে সেরা পাঁচজন পিঠাশিল্পীকে প্রদান করা হবে সম্মাননা।

ভয়েসটিভি/এমএম

You may also like