Home জাতীয় বইমেলা নিয়ে কৌশলী হচ্ছেন প্রকাশকরা

বইমেলা নিয়ে কৌশলী হচ্ছেন প্রকাশকরা

by Mesbah Mukul

২০২২-এর অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন প্রকাশক, লেখক ও আয়োজকরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাকালে বই প্রকাশ ও বিক্রি কমে আসা এবং প্রণোদনার সুযোগ তৈরি না হওয়ায় এবার পাণ্ডুলিপি বাছাই, বইয়ের সংখ্যা-সব নিয়েই কৌশলী হতে হচ্ছে তাদের।

এবারের মেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।’ মেলায় মৌসুমী প্রকাশকদের স্থান না দিয়ে শুধু মানসম্মত পেশাদার প্রকাশকদের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির কথা মূলধারার প্রকাশকরা দাবি করে এলেও সেটাকে খুব বেশি আমলে নিচ্ছে না একাডেমি।

একাডেমির মতে, সমিতির বাইরে যারা প্রকাশক, তাদের সংখ্যা বেশি। সবদিক বিবেচনা করে পরিকল্পনা চলছে। তবে এবারের মেলায় স্টল ভাড়া কিস্তিতে পরিশোধে গতবারের তুলনায় বেশি সময় দেওয়া হচ্ছে।

কোভিড পরিস্থিতিতে মুখ থুবড়ে পড়া প্রকাশনা জগতে টিকে থাকতে বইমেলায় সবাইকেই নানা কৌশল নিতেই হচ্ছে বলে মনে করেন জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির পরিচালক (অর্থ) মো. তোফাজ্জল হোসেন। তিনি বলেন, ‘গত দুই বছরে প্রকাশকদের অবস্থা খারাপ হয়েছে। কোভিডে লেখকরা অনেক বেশি লিখেছেন, কিন্তু প্রকাশকদের অর্থনৈতিক অবস্থাও খারাপ। এখন টিকে থাকার কৌশল নির্ধারণ জরুরি।’

প্রতি বছর মৌসুমী প্রকাশকদের স্টল বরাদ্দ দেওয়া নিয়ে যে সমালোচনা ওঠে-এবার সেসব নিয়ে আগাম কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্টল বিন্যাসের বিষয়ে এক ধরনের অভিযোগ ওঠে। তবে এবার বাংলা একাডেমির কিছু চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। আমরা যারা প্রকাশনার কাজ করছি তাদের ক্ষতির পরিমাণটা বলে বোঝানো যাবে না। একাডেমি এবং জ্ঞান ও সৃজনশীল সমিতি একসঙ্গে যদি ভাবতে পারে যে করণীয় কী এবং কীভাবে ক্ষতি এড়ানো যায়—তবে একটা পথ পাওয়া যাবে বলে বিশ্বাস করি।’

প্রকাশনা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোভিডের কারণে প্রকাশনা শিল্প মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ৭০-৮০ শতাংশ প্রকাশক মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এবার মেলায় সেটা পুষিয়ে নেবার আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ফলে প্রকাশকরা যার যার মতো কৌশল নির্ধারণ করছেন। গেলবারের খরচ পুষিয়ে নিতে কেউ হয়তো স্টলে সাশ্রয় করতে চাইবেন। কিন্তু এটা দিয়ে সেই বিশাল ক্ষতি কমানোরে সম্ভাবনা একেবারেই নেই। কেননা তখনকার যে বই, সেটাই মার্কেটিং করা সম্ভব হয়নি। তাই এখন যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি সেটা যদি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকে, তবে সবাই যার যার মতো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে।

বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক জালাল আহমেদ বলেন, ‘এবার বেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে। ওমিক্রনের আশঙ্কা আছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।’

মঙ্গলবার সভায় বেশকিছু বিষয় নির্ধারিত হয়েছে বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘প্রকাশকদের আর্থিক সহযোগিতার প্রশ্নে গত বছর খরচের অর্ধেকটা (প্রায় ৯৪ লাখ টাকা) সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও আমরা তা পাইনি। স্টল বরাদ্দের কিস্তির টাকা ৫ জানুয়ারির ভেতর পরিশোধের কথা বলা হয়েছে। সেটি আর বাড়ানো সম্ভব হবে না। কেননা এর পরে কীভাবে স্টল বিন্যাস হবে, কারা স্টল পাবেন তা নির্ধারণের কাজ থাকে।’

তবে এত কিছুর পরও ওমিক্রনের বিস্তার বেড়ে গেলে নতুন করে ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয় কিনা সেই শঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না প্রকাশকরা।

ভয়েসটিভি/এমএম

You may also like