Home জাতীয় এক পরিবারে তিন প্রার্থীর দু’জন বিদ্রোহী

এক পরিবারে তিন প্রার্থীর দু’জন বিদ্রোহী

by Newsroom
বিদ্রোহী

পাবনার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ছেলে আসিফ শামস। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী টুকুর সহোদর আবদুল বাতেন এবং ভাইয়ের মেয়ে সাদিয়া ইসলাম। আবদুল বাতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে বেড়া পৌরসভার মেয়র। সাদিয়া ইসলাম শামসুল হকের বড় ভাই বদিউল আলমের মেয়ে।

তবে প্রতিপক্ষকে ভয় দেখাতে পুলিশের দরকার নেই জানিয়ে সাবেক এ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, তার নিজস্ব কর্মী বাহিনী রয়েছে।
প্রতিপক্ষকে পুলিশের ভয় দেখানোর বিষয়ে শামসুল হক টুকু বলেন, ‘আমার তো কর্মী বাহিনীই আছে। পুলিশ লাগবে কেন?’

একই পরিবারের তিনজন মেয়র পদপ্রার্থী হওয়ায় বেড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। নিজের সন্তানকে ভোটে জেতানোর জন্য নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এলাকায় অবস্থান করছেন শামসুল হক। তার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের হুমকি ও এলাকাছাড়া করার অভিযোগও উঠেছে।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, বেড়া পৌর মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ছেলে ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আসিফ শামস রঞ্জন, এমপির ছোটভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র আব্দুল বাতেন এবং ভাতিজি এস এম সাদিয়া আলম।

এছাড়া মেয়র পদে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ এইচ এম ফজলুর রহমান মাসুদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. আব্দুল আওয়াল এবং কে এম আব্দুল্লাহ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শামসুল হক টুকুর ছোটভাই ও বর্তমান মেয়র আব্দুল বাতেন বলেন, দলের কিছু ষড়যন্ত্রকারী আমাকে রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করার চেষ্টা করছে। আমি বেড়া পৌরসভায় গত ১৭ বছর ধরে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছি। মডেল পৌরসভা হিসেবে বেড়াকে গড়ে তুলেছি। আধুনিক নগর গড়ার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতেই জনগণের দাবির মুখে প্রার্থী হয়েছি।

মেয়র আব্দুল বাতেন আরও বলেন, দল মনোনীত প্রার্থী আমার ভাতিজা হলেও রাজনীতিতে নতুন, অনভিজ্ঞ। তার তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই। আমি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নই, জনগণের পক্ষে নির্বাচন করছি।

এমপির ছেলে ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জন বলেন, দলীয় সভানেত্রী যাচাই-বাছাই করে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা আছে কিনা তা সময়ই বলে দেবে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জনগণ নৌকার প্রার্থীকেই ভোট দেবে।

টুকু পরিবারের আরেক প্রার্থী ও এমপির বড় ভাইয়ের মেয়ে সাদিয়া আলম বলেন, আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান, আমার বাবা বদিউল আলম বেড়া আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। আমি দীর্ঘদিন উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। জনগণের অনুরোধে প্রার্থী হয়েছি।

সাদিয়া অভিযোগ করেন, পেশী শক্তি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে বেড়ায় সামাজিক মূল্যবোধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের পথে। শান্তির জনপদ হিসেবে বেড়া পৌরসভাকে গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য।

এদিকে নিজ পরিবার থেকে একাধিক প্রার্থী হওয়ার ঘটনাকে গণতান্ত্রিক অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু।

তিনি বলেন, পরিবার যখন বড় হয়, তখন আলাদা আলাদা ইউনিট গড়ে ওঠে। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই নির্বাচিত হবে।

বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ দুলাল বলেন, সংসদ সদস্যের নিজের পরিবার থেকে একাধিক প্রার্থী। দলের অন্য বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নিজ নিজ সমর্থকদের নিয়ে মাঠে রয়েছে। এতে নৌকার ভোটারদের জন্য বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দলের নেতারাও বিব্রত। আমরা সমঝোতার মাধ্যমে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে আনতে চেষ্টা করছি।

নিকটাত্মীয়দের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শামসুল হক বলেন, ‘এটাই তো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই দেখা যাচ্ছে। ’

ভয়েস টিভি/ডি

You may also like