Home জাতীয় রেইনট্রির ধর্ষণ মামলার রায়ে যা বললেন আদালত

রেইনট্রির ধর্ষণ মামলার রায়ে যা বললেন আদালত

by Mesbah Mukul

বনানীর রেইনট্রি হোটেলে আলোচিত ধর্ষণ মামলায় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আনিত ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

এই মামলায় গত বৃহস্পতিবার আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। রায় ঘোষণা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার।

দুপুর ১টা ১০মিনিট থেকে মোছা. কামরুন্নাহার রায় পড়া শুরু করেন। এ সময় বিচারক বলেন,

আমি একজন বিচারক। সবকিছু আমাকে পুঙ্খানুপঙ্খভাবে দেখতে হয়েছে। এজাহার, অভিযোগপত্র, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে হয়েছে। নরমাল মামলায় এত কিছু বলতে হয় না। আপনারা (আইনজীবীরা) এ মামলাকে বলেন আলোচিত মামলা। আমি এটা মনে করি না। আমার কাছে সব মামলাই সমান। এ মামলায় ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জন সাক্ষ্য দেন। ১১ জন সাক্ষী রেইনট্রি হোটেলের কর্মচারী। তারা কেউ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানত না। পুলিশের মাধ্যমে তারা ঘটনা জানে।

মামলার বাদী দুজন স্বেচ্ছায় রেইনট্রি হোটেলে যান। সেখানে স্বেচ্ছায় তারা আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেন। তাদের ভয়ভীতি বা মারধর করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করা হয়নি।

ঘটনার ৩৮ দিন পর মামলা ফাইল করা হয়। ৩৯ দিন পর করা হয় মেডিকেল। ভিকটিমদের পোশাকে ধর্ষণর আলামত পাওয়া যায়নি। ধর্ষণ প্রমাণে মেডিকেল লাগে সেটাও প্রমাণিত হয়নি। বীর্যের উপস্থিতিও পাওয়া যায়নি। ধর্ষণের উপাদান না পাওয়ার পরও পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে অহেতুক ট্রায়ালে পাঠায়। মামলাটির বিচারকাজ এ আদালতে চলেছে ৯৩ কার্যদিবস। আজ ৯৪তম কার্যদিবস। এতে আদালতের সময় নষ্ট হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী সাফাতের স্ত্রী পিয়াসাকে খালাতো বোন পরিচয় দেন। পরবর্তীতে তিনি জানান পিয়াসা তার খালাতো বোন না। এজাহারে তিনি মিথ্যা বলেছেন। মামলার বাদীর সাক্ষ্য থেকে দেখা যায়, কখন, কোথায়, কীভাবে, কোন রুমে তাদের ধর্ষণ করা হয় সে সম্পর্কে তারা কিছু বলেননি।

ধর্ষণের শিকার হলে ভুক্তভোগীর কাজ ছিল থানায় যাওয়া। তারা তা না করে আগেই তাদের বন্ধু শাহরিয়ার আহমেদ এবং স্নেহার সঙ্গে দেখা করেন। তা ছাড়া তারা ড্রিংকস করেন। বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্টে আড্ডা দেন। তারা স্বেচ্ছায় রেইনট্রি হোটেলে যান। হোটেলের কেউ বলেলনি এমন ঘটনা ঘটেছে। তারা বলেছেন তাদের চারজনকে মারধর করা হয়েছে। চিৎকার করে সাহায্য চাইলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। চারজন যদি এক সঙ্গে চিৎকার করে তাহলে তা তো এক কিলোমিটার দূর তেকে শোনা যাওয়ার কথা ছিল।

মামলায় সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ ও বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবনাবন্দি দিয়েছেন। এদের মধ্যে সাদমান ও বিল্লাল ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে তা উঠে আসেনি। আর সাফাত বলেছে উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে তারা শারীরিকভাবে মিলিত হয়। বিষয়টি ধর্ষণের পর্যায়ে পড়ে কি না? তবে নাঈম আশরাফ একজনকে জোর করে ধর্ষণ করে। সাক্ষী দ্বারা তা প্রমাণিত হয়নি। অভিযোগকারীদের শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে, তবে ধর্ষণ না।

রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। কাজেই আসামিদের খালাস দেওয়া হলো।

ভয়েসটিভি/এমএম

You may also like