Home জাতীয় মুশতাক আহমেদের ‘ন্যাচারাল ডেথ’ হয়েছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মুশতাক আহমেদের ‘ন্যাচারাল ডেথ’ হয়েছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

by Newsroom
মুশতাক

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, গাজীপুরের জেলা প্রশাসন ও কারা অধিদফতরের গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুকে ‘ন্যাচারাল ডেথ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, ময়না তদন্তে যেটা আসছে, সেটাতেও কোনও আঘাতের চিহ্ন তার গায়ে পায়নি। পোস্ট মর্টেমে প্রাথমিকভাবে ডাক্তাররা যেসব অভিমতগুলো করেছেন, এগুলো কিন্তু লিখিত অভিমত নয়। পোস্ট মর্টেমের রিপোর্টটা আসলে আমরা চূড়ান্তভাবে জানতে পারবো।

৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে অসুস্থ হয়ে পড়েন লেখক মুশতাক আহমেদ। প্রথমে কারা হাসপাতাল ও পরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের গাফিলতি ছিল কি-না, যদি থাকে তবে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এছাড়া গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও কারা অধিদফতরের পক্ষ থেকেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সবগুলো কমিটিই ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুশতাক আহমেদ গত বছরের ৬ মে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে অন্তরীণ হন। তিনি কারাগারে ইন্তেকাল করেন, সেটা আপনারা সবই শুনেছেন। প্রশ্ন আসছে, তিনি কারাগারে কীভাবে মৃত্যুবরণ করলেন?’

তিনি বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছিলাম। গাজীপুরের ডিসিও একটি কমিটি করেছিলেন, আইজি প্রিজন তিনিও তাৎক্ষণিকভাবে একটি কমিটি করেছিলেন। সবগুলো কমিটির অভিমত এক রকম। তারা ভিডিও ফুটেজ ও কারাগারে যারা তার সঙ্গে অন্তরীণ ছিলেন, তার রুমে যে কয়জন ছিলেন, কর্তব্যরত চিকিৎসক যারা ছিলেন, হাসপাতালে যখন নিয়ে গেছেন- তাদের সবার অভিমত নিয়ে তারা যে রিপোর্টটি প্রদান করেছেন সেই রিপোর্টে বলেছেন, এটা একটা ন্যাচারাল ডেথ হয়েছে। ন্যাচারাল ডেথ মানে অস্বাভাবিক মৃত্যু নয়। সেটাই তারা তাদের তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমাদের জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা সবগুলো রিপোর্টেই এখন পর্যন্ত এইটুকুই পেয়েছি। আমরা ফাইনালি পোস্ট মর্টেমের রিপোর্টের পর আরও বিস্তারিত জানতে পারব। এ পর্যন্ত আমাদের কাছে যা আসছে, এর মূল হলো এটা ন্যাচারাল ডেথ হয়েছে। তিনি (মুশতাক আহমেদ) বাথরুমে গিয়েছিলেন। ওয়াশরুমে যাওয়ার পর সেখানেই তিনি অজ্ঞান হয়েছিলেন। তারপর তাকে কারাগারে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। এরপর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সুরতহাল রিপোর্টেও মুশতাকের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পোস্ট মর্টেমের রিপোর্টটি আসলেই আমরা চূড়ান্তভাবে জানতে পারবো। প্রাথমিকভাবে ডাক্তাররা যে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সেটাই আমাদের রিপোর্টে আসছে। আর সেটাই আমি আপনাদের জানালাম। এর বাইরে যদি কিছু থাকে সেটা পোস্টমর্টেম রিপোর্টে এলে আপনাদের সেটা জানাব।

এর আগে গত বছরের মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগ এনে ওই সময় মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র‌্যাব। সেই মামলায় দুজন জামিনে মুক্তি পেলেও মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয় বার নাকচ হয়।

আরও পড়ুন : কারাগারে মুশতাকের মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি

ভয়েস টিভি/এমএইচ

You may also like