Home বিশ্ব যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ এক ডজন ধনী

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ এক ডজন ধনী

by Amir Shohel
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ

ক্ষমতার অন্যতম উৎসই টাকা। যার যতো বেশি টাকা, সে ততো বেশি ক্ষমতাশালী। বর্তমান বিশ্বে অঢেল টাকা মানেই, অঢেল ক্ষমতা। ধনীরা তাদের অর্থনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে চেষ্টা করে রাষ্ট্র বা সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করতে। একইসঙ্গে নিজেদের আরও ধনবান করতে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করে নেয়। পাশাপাশি নেপথ্যে থেকে রাজনীতির কলকাঠি নেড়ে আরও বিত্তবান হয়ে ওঠে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের এমনই শীর্ষ এক ডজন ধনীর নাম প্রকাশ করেছে দেশটির এক গবেষণা প্রতিষ্ঠান- ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ। যাদের হাতে আছে হাজার হাজার কোটি ডলার।

একদিকে বিশ্বে কয়েকশ কোটি মানুষের দিন কাটে অনাহরে-অর্ধাহারে, অন্যদিকে মুষ্টিমেয় কয়েকজনের হাতে আছে পাহাড় পরিমাণ সম্পদ। যুক্তরাষ্ট্রের সবচে ক্ষমতাবান এমন ১২ জন ধনীর নাম প্রকাশ করলো ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ। এই শীর্ষ ধনীদের মোট সম্পদের পরিমাণ ১৩ আগস্ট পর্যন্ত এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। অর্থাৎ এক লাখ কোটি ডলারের ওপর।

এসব শীর্ষ ধনীরা হলেন, জেফ বেজোস, বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেট, মার্ক জাকারবার্গ, এলন মাস্ক, স্টিভ ব্যালমার, ল্যারি অ্যালিসন, ল্যারি পেইজ, সের্গেই ব্রিন, অ্যালিস ওয়ালটন, জিম ওয়ালটন ও রব ওয়ালটন।

গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি এসব ধনীকে ‘অলিগার্কিক ডজন’ হিসেবে অভিহিত করেছে। কারণ তাদের সম্পদের পাশাপাশি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ওপর ব্যাপক প্রভাব। এই এক ডজন ধনীর মোট সম্পদ এক লাখ কোটি ডলারের বেশি হওয়াকে- ডিস্টার্বিং মাইলস্টোন’ বলেও অভিহিত করা হয়েছে।

তবে সবচেয়ে অবাক তথ্য, এ বছরের ১৮ মার্চ থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্ব অর্থনীতি যখন মহামারি করোনায় বিপর্যস্ত। তখন এসব ধনীদের মোট সম্পদ বেড়েছে ২৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার বা ৪০ শতাংশ। অথচ চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে অর্ধেকের বেশি পরিবারের আয় কমেছে।

করোনাকালে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও অনলাইনিত্তিক খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান আমাজনের জেফ বেজোসের সম্পদ বেড়েছে সর্বোচ্চ ৭৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। তার সম্পদ ১১৩ বিলিয়ন থেকে বেড়ে হয়েছে ১৯৪ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে তিনি প্রতি সেকেন্ডে আয় করেন বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭১ লাখ।

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের সম্পদ বেড়েছে ১৬ দশমিক ১ ভাগ। মাত্র ৬ মাস আগেও তার সম্পদ ছিলো ৯৮ বিলিয়ন ডলার। তা বেড়ে হয়েছে ১১৪ বিলিয়ন ডলার। আর ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গের সম্পদ ৫৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন থেকে বেড়ে দাড়িয়েছে ৯৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে। বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের সিইও ওয়ারেন বাফেটের সম্পদের পরিমাণ এখন ৮০ বিলিয়ন। আগে তার সম্পদ ছিলো ৬৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।

তবে সবচেয়ে বেশি সম্পদ বেড়েছে টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও এলন মাস্কের। তার সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার। মাত্র ৬ মাসে তিনি ২৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন থেকে ৭৩ বিলিয়ন ডলারের মালিক হয়েছেন। এছাড়া মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ব্যালমার ৫২ দশমিক ৭ বিলিয়ন থেকে ৭১ বিলিয়ন, ওরাকল প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি অ্যালিসন ৫৯ বিলিয়ন থেকে ৭০ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ গড়েছেন।

সম্পদ বাড়ানোর দিক থেকে পিছিয়ে নেই গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেইজও। তিনি ৫০ দশমিক ৯ বিলিয়ন থেকে মালিক হয়েছেন ৬৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের। আর সের্গেই ব্রিন ৪৯ দশমিক ১ বিলিয়ন থেকে মালিক হন ৬৫ দশমিক ৬ বিলিয়নের।

শীর্ষ এক ডজন ধনীর তালিকায় আরও আছেন ওয়ালমার্টের উত্তরাধিকারী অ্যালিস ওয়ালটনের নামও। তার সম্পদ ছিলো ৫৪.৪ বিলিয়ন ডলার। এখন হয়েছে ৬০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। তার পেছনেই রয়েছেন জিম ওয়ালটন ও রব ওয়ালটনের নাম। তাদের সম্পদ রয়েছে ৫৪.৬ বিলিয়ন ও ৫৪. ১ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে চলতি বছরের শুরুতে করোনা আতঙ্কে বিশ্বব্যাপী মানুষের আয় কমেছে। আর জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবার প্রতি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। যা ১৯৫০ সালের পর বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় পতন।

অনুবাদক : ফেরদৌস মামুন, সাংবাদিক

You may also like