Home চিকিৎসা চলতি মাসেই বাজারে আসছে করোনার ঔষধ, অনুমতি পেলো দেশীয় ৮ কোম্পানি

চলতি মাসেই বাজারে আসছে করোনার ঔষধ, অনুমতি পেলো দেশীয় ৮ কোম্পানি

by shahin

ভয়েজ রিপোর্ট: করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত ওষুধ রেমডেসিভির উৎপাদনের জন্য অনুমতি দিয়েছে ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। প্রাথমিকভাবে দেশের ৮টি কোম্পানিকে এই অনুমতি দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে দুটি কোম্পানি চলতি মাসেই ওষুধটি বাজারে আনবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো: মাহবুবুর রহমান।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ও সে দেশের সরকার করোনা চিকিৎসায় ইবোলার ওষুধ রেমডেসিভির অনুমোদন দেয়।

করোনার প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এর প্রতিরোধক ভ্যাকসিন কিংবা কার্যকর প্রতিষেধক ওষুধ তৈরির জন্য দেশে দেশে চেষ্টা চলছে। এরমধ্যে বর্তমানে বাজারে বিদ্যমান কয়েকটি ওষুধের নামও এসেছে। তবে গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলাল্ড ট্রাম্প এবং দেশটির বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকের পর করোনার জরুরি চিকিৎসার জন্য রেমডেসিভির ব্যবহারের অনুমতি দেয় মার্কিন ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন-এফডিএ। বাংলাদেশেই এবার ওষুধটি উৎপাদন হবে।

এখন পর্যন্ত যে মেডিসিনগুলো করোনার ক্ষেত্রে ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে তার মধ্যে মোটামুটি ট্রায়াল দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে এটির কার্যকারিতা আছে।

মার্কিন গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের ওপর ওষুধটি যত দ্রুত ব্যবহার করা যায় তত বেশি কার্যকর হয়। লক্ষ্মণ অনুযায়ী অন্য ওষুধ ব্যবহার করা রোগীদের যেখানে সুস্থ হতে ১৫ দিনের মতো সময় লেগেছে সেখানে রেমডিসিভির প্রয়োগ করা রোগীরা মোটামুটি ১১দিনেই সুস্থ হয়েছেন।

তারা বলছেন, আগেভাগেই ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছে এমন শতকরা ৬২ ভাগ রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে।

এ পর্যন্ত দেশের আটটি কোম্পানিকে ‘রেমডেসিভির’ উৎপাদনে অনুমোদন পাওয়া ৮টি কম্পানি কবে নাগাদ উৎপাদনে যাবে তা নির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও ঔষধ প্রশাসনের এক কর্ককর্তা জানান, চলতি মাসেই এ অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগটি বাজারে আসতে পারে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, আগে সাতটিসহ আরও একটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মোট আটটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া হলো।

এখন পর্যন্ত যে সব কম্পানি অনুমোদন পয়েছে সে গুলো হলো বেক্সিমকো, বেকন, অপসোনিন, এসকেএফ, ইনসেপ্টা, স্কয়ার এবং হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এ সাত কোম্পানিকে অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। নতুন করে যে একটি কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছে, তার নাম তিনি জানাননি।

কবে নাগাদ তারা উৎপাদনে যাবে জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না তারা প্রোডাকশনে কবে যাবে। তবে আশা করা যায় এ মাসের মধ্যে ওষুধটি বাজারে চলে আসবে।

এ অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগটি করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। যুক্তরাষ্ট্র এ ওষুধের অনুমোদন দিয়েছে।

রেমডেসিভির কীভাবে কাজ করে?

রেমডেসিভির প্রধান কাজ হলো– মানব কোষে ঢোকার পর ভাইরাস যে বংশবৃদ্ধি করে তা বন্ধ করে দেয়া ও বংশবৃদ্ধির গতি কমিয়ে দেয়া।

করোনাভাইরাসের বংশবৃদ্ধিতে ভাইরাল আরএনএ ডিপেনডেন্ট আরএনএ পলিমারেজ এনজাইম প্রয়োজন। রেমডেসিভির এই এনজাইমকে ব্লক করে। ফলে ভাইরাসের বিস্তার কম হয়। বংশবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় আক্রান্ত রোগীর দেহে ভাইরাস লোড অনেক কমে যায়। ফলে তাদের হাসপাতালে অপেক্ষাকৃত কম দিন অবস্থান করতে হয়। মৃত্যুর হার ১১ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশে নেমে আসে।

করোনাভাইরাস আমাদের ফুসফুসের কোষে ঢোকার পর কোষের বংশবৃদ্ধির উপাদানগুলো ছিনতাই করে বংশবৃদ্ধি করতে থাকে। একটা ভাইরাস মুহূর্তেই লাখো ভাইরাসের জন্ম দেয়। একসময় এই ছোট ছোট ভাইরাস কোষকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে বের হয় এবং পাশের নতুন একটি কোষকে আক্রমণ করে এবং আবার বংশবৃদ্ধি করতে থাকে।

এভাবেই করোনাভাইরাস আমাদের ফুসফুসকে ধ্বংস করে মাত্র কয়েক দিনে। আর তাই রোগী শ্বাস নিতে পারেন না।

You may also like