Home জাতীয় যেসব জটিলতায় ৩ বছরেও শুরু হয়নি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

যেসব জটিলতায় ৩ বছরেও শুরু হয়নি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

by Newsroom
৩০ হাজার

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নে বাধ্য হয়ে দেশ ছাড়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার ৩ বছর পূর্তি হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। ২০১৭ সালের এই দিনে মানবিক কারণে তাদের সাময়িক আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু বিশ্ব সম্প্রদায়কে পাশে নিয়ে এ সমস্যার সমাধানে চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু, দীর্ঘ তিন বছরেও কূটনৈতিক জটিলতা আর কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। কবে থেকে তা শুরু করা যাবে সে বিষয়টিও অনিশ্চিত।

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ কে আব্দুল মোমেনের ভাস্য মতে মিয়ানমারের অনিচ্ছার কারণেই প্রত্যাবাসন চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এছাড়া করোনার কারণে কিছু চলমান প্রক্রিয়া থমকে আছে বলেও জানালেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কর্ম প্রক্রিয়া একটু স্লথ হয়েছে। এর মূলে রয়েছে কভিড-১৯। তারা (মিয়ানমার) আরেকটা অযুহাত দেয়, ওই দেশে নির্বাচন হবে- তবে মনে হয় না তাদের কোনো আন্তরিকতা আছে। “রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন একটি চলমান প্রক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, “এ প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে”।

আগামী নভেম্বরে মিয়ানমারে নির্বাচনের পর এবং আন্তজার্তিক আদালতে গাম্বিয়ার করা মামলার ফলাফল এলে এই চুক্তি নতুন গতি পাবে বলে দাবী করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে ভাটা পড়েছে। তার ওপর মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা থমকে আছে। কূটনৈতিক জটিলতা থাকলেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের এক নম্বর এবং একমাত্র চাওয়া হলো রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন। মিয়ানমার যখনই চাইবে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে প্রস্তুত রয়েছে।

তবে-কূটনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারের জনগণের মধ্যে জনমত গড়ে তোলাসহ চীন এবং ভারতের সহযোগিতা চাওয়ার ক্ষেত্রে নতুন করে ভাবতে হবে এখন। আর মিয়ানমারের জনগণ যদি ইতিবাচক না হয় তাহলে প্রত্যাবাসন কঠিন হবে।

২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট মিয়ানমার সেনাদের নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া শুরু করে তারা। প্রায় ১১ লাখ ১৮ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা এখন উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় ৩৪টি ক্যাম্পে বসবাস করছে। তাদের ফিরিয়ে নিতে প্রত্যাবাসন চুক্তি করলেও একজনকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার।

এ পর্যন্ত ছয় লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দেয়ার পর যাচাইবাছাই করে ৩০ হাজারের একটি তালিকা ফেরত দিয়েছে মিয়ানমার। দীর্ঘ তিন বছরেও কূটনৈতিক জটিলতা আর কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। কবে থেকে তা শুরু করা যাবে সে বিষয়টিও অনিশ্চিত।

বাংলাদেশ সরকার এবং ‘ইউএনএইচসিআর’-এর তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এসব রোহিঙ্গাকে খাদ্য, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন অফিস ৩৪টি শরণার্থী শিবিরে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

ভয়েস টিভি/টিআর

You may also like