Home অপরাধ লিবিয়ায় হত্যাকাণ্ড: এক মানবপাচারকারী গ্রেফতার

লিবিয়ায় হত্যাকাণ্ড: এক মানবপাচারকারী গ্রেফতার

by Newsroom

ভয়েস রিপোর্ট: লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় মানবপাচারকারী চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তার নাম কামাল হোসেন ওরফে হাজী কামাল (৫৫)।
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম জানান, সোমবার ভোরে গুলশানের শাহজাদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় মানবপাচারকারী চক্র সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন ও পাসপোর্ট জব্দ হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২৮ মে লিবিয়ার মিজদা শহরে মানবপাচারকারীদের হাতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও ১২ জন আহত হয়।

হাজী কামালের পিতার নাম মো: জামাত আলী। কুষ্টিয়ার সদর থানা এলাকায় তার গ্রামের বাড়ি।

টাইলস শ্রমিক পাঠানোর আড়ালে মানবপাচার করতেন কামাল উদ্দিন ওরফে হাজী কামাল (৫৫)। গত ১০ বছর ধরে তিনি অবৈধভাবে মানবপাচার করে আসছেন। এ পর্যন্ত ৪শ বাংলাদেশি নাগরিককে লিবিয়ায় পাচার করেছেন তিনি। টাইলসের শ্রমিকের অধিক চাহিদা আর দিনে ৫/৬ হাজার করে টাকা আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মানবপাচার করতেন হাজী কামাল। কৌশল হিসাবে লিবিয়াতে যাওয়ার আগে মাত্র এক লাখ টাকা নিতেন। লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে নিতেন বাকি ৪ লাখ টাকা। টাকা না দিলে লিবিয়ায় শ্রমিকদের নির্যাতন করে সেই রেকর্ড শোনাতেন পরিবারের সদস্যদের।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলি র‌্যাব-৩ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল রকিবুল হাসান।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, হাজী কামাল মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থানের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে এই অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা বিদেশি চক্রের যোগসাজশে অবৈধভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিভিন্ন দেশে পাঠায়। চক্রটি তিন ধাপে এই কাজ করতো। প্রথমে বিদেশ গমনেচ্ছুদের নির্বাচন করতো। চক্রের দেশীয় এজেন্টরা বিভিন্ন এলাকার স্বল্প আয়ের মানুষকে উন্নত দেশে অনেক টাকা আয়ের লোভ দেখাত। তারপর তাদের পাসপোর্ট, ভিসা সংগ্রহের নামে এক লাখ টাকা নিত। বাকি টাকা ইউরোপে গিয়ে পরিশোধ করতে হবে বলে জানাতো। একারণে সাধারণ মানুষ তাদের ফাঁদে সহজেই পা দিতো। লিবিয়ায় নিয়ে শ্রমিকদের ওপর শুরু হতো নির্যাতন। নির্যাতনের রেকর্ড শুনিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে আদায় করা হতো আরও টাকা। যারা টাকা দিতে পারতো তাদের অবৈধভাবে বিভিন্ন রুটে ইউরোপে পাঠানোর চেষ্টা করতো চক্রটি।

বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় পাঠানো:

বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় পাঠানোর ক্ষেত্রে এই চক্রের সদস্যরা বেশ কয়েকটি রুট ব্যবহার করে থাকেন। সেই রুটগুলো তার সুযোগ-সুবিধা অনুযায়ী পরির্বতন কিংবা নতুন রুট নির্ধারণ করে থাকেন। সম্প্রতি পাচারকারীরা যে রুটটি ব্যবহার করছিল তা হলো বাংলাদেশ-কলকাতা-মুম্বাই-দুবাই-মিশর-বেনগাজী-ত্রিপলী (লিবিয়া)। দুবাইয়ে পৌঁছানোর পর অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিদেশি এজেন্টদের তত্ত্বাবধানে ৭/৮দিন রাখা হতো।
দুবাই থেকে বেনগাজীতে পাঠানোর জন্য বেনগাজী থেকে এজেন্টরা কথিত ‘মরাকাপা’ নামে একটি ডকুমেন্ট দুবাইয়ে পাঠাতো। এরপর সেই ডকুমেন্ট নিয়ে বিদেশি এজেন্ট অভিবাসন প্রত্যাশীদের মিশর ট্রানজিট নিয়ে লিবিয়ার বেনগাজীতে পাঠাতেন। বেনগাজী থেকে বাংলাদেশি এজেন্টদের সহযোগিতায় তাদের ত্রিপোলিতে পাঠানো হতো।

You may also like